বাবার ভিটায় ফিরতে পারছেন না ছেলে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন
![বাবার ভিটায় ফিরতে পারছেন না ছেলে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2022September/panchagarh-20220924161756.jpg)
বাবার ভিটায় ফিরতে না পেরে স্ত্রী, দুই শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে একটি পরিবার। পারিবারিক অমতে বিয়ে করাই এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সন্টু। এখন বাপের ভিটায় ফিরতে পারছেন না তিনি।
বিজ্ঞাপন
ফরিদুল ইসলাম সন্টুর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের স্বনামধন্য গ্রাম্য ডাক্তার ছলিম উদ্দিনের ছেলে।
ভুক্তভোগী সন্টুর অভিযোগ, তিন বোন ও বড় ভাইয়ের অমতে বিয়ে করার অপরাধে ৪ বছর আগে ঘরে তালা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থেকে কোনোভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে তাদের। বাবার অর্পিত সম্পত্তির অংশীদার থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছেন ভাই-বোনরা।
বিজ্ঞাপন
সন্টু জানান, সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। বড় দুই ভাই মারা গেছেন। অপর বড় ভাই ৫৫ পেরিয়েছে। বিয়ে করেননি। তিন বোন। তারাও অবিবাহিত। ছোট বোন ঝড়না একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। বড় দুই বোন মধ্যবয়স্ক। বাড়িতেই থাকেন। তিন বোন এক ভাই মিলে এক বাড়িতেই থাকা হতো। তারা চাননি সন্টু বিয়ে করে ঘর সংসারি হোক। কিন্তু তাদের কথা না শুনে বিয়ে করায় সম্পর্কের ফাটল ধরে। শুরু হয় প্রায় ঝগড়া-ঝাটি। ঝগড়া থেকে হাতাহাতি, মারামারি। শেষ পর্যন্ত মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
এখন বসতভিটার ১৮ শতাংশ জমির মধ্যে ৪ শতাংশ জমির অধিকার পেতে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। তাদের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ মিটাতে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে মাঝিপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষক জাহেদ আলী, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, সমাজ সেবক ও রাজনৈতিক হামিদুল হাসান লাবুসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন মীমাংসার উদ্যোগ নেন।
বিজ্ঞাপন
মীমাংসার উদ্যোগ নেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও। কিন্তু তা না হওয়ায় তেতুঁলিয়া থানায় ১ মাসে তিনবার আবেদন করা হয়। কিন্তু সুফল পাননি বলে জানান। শেষ পর্যন্ত উপায়ন্তর না পেয়ে নিজের ভাই-বোনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন এই ভুক্তভোগী।
বিষয়টির ব্যাপারে সহকারী অধ্যাপক জাহেদ আলী জানান, বিষয়টি নিয়ে সন্টুর ভাই মন্টু আজ না কাল করছে। তাদের মধ্যে মিটমাটের কোনো ইচ্ছে দেখছি না। ভজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন জানান, পারিবারিক বিষয়টি মীমাংসার জন্য অনেকবার ডাকা হলেও সন্টুর ভাই বোনেরা কারও কথা শোনে না।
তবে সন্টুর বড় ভাই মন্টু জানান, সন্টু আমাদের ছোট ভাই। সে বাবার সম্পত্তির ৪ শতক জমির অংশীদার। আমরা দেওয়া বা নেওয়ার কে? আমরা দিতে চাই। কিন্তু সন্টু তো আমাদের কথা শুনে না। বরঞ্চ সেই আমাদের মারধর করে। তার বউও মারধর করে। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিয়ে বাড়িতে এসে মারামারি পর্যন্ত করেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়ে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। অপমান অপদস্ত করে। বড় ভাই তো, আমি মারা গেলে তো তারাই পাবে। কিন্তু তারা এখানে এলে আমরা নিরাপত্তাহীন। তার নামে মামলা চলছে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, পরিবারটিতে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে। সন্টু আবেদন করলে আমি তদন্তের জন্য এসআই শাকিলকে দায়িত্ব দেই। শাকিল একবার গিয়ে ফিরে এসেছে। তাকে আবার পাঠানো হবে।
এসকে দোয়েল/এমএএস