দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯, যা বললেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
রংপুরের তারাগঞ্জে যাত্রীবাহী দুই বাসের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন ঘটনাস্থলে এবং চারজন রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কের তারাগঞ্জের খারুভাজ সেতুর কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪০ জন ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় ওঠে এসেছে দুর্ঘটনার চিত্র। প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তফা হোসেন (৪৫) ঠাকুরগাঁও থেকে ইসলাম পরিবহনে উঠেন। তিনি বর্তমানে রমেক হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে তিনি বলেন, রাত ১২টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। গাড়িও চলছিল দ্রুগতিতে। হঠাৎ বিকট শব্দ। মুহূর্তের মধ্যে কী যে ঘটে গেল, কিছুই বুঝতে পারলাম না। এরপর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি করে আমাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
চিকিৎসাধীন আব্দুর রহিম (২২) বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর শহরের সিও বাজার থেকে জোয়ানা পরিবহনের বাসে উঠি তারাগঞ্জ যাওয়ার জন্য। ওই সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। বাসে ওঠার আধা ঘণ্টার মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটল। এরপর আর কিছু বলতে পারি না।
ঠাকুরগাঁও থেকে ছেড়ে আসা ইসলাম পরিবহনের যাত্রী চিকিৎসাধীন মোজাফফর হোসেন বলেন, আমরা তখন বাসের ভেতর। চোখে ঘুম ঘুম ভাব। বিকট শব্দে শরীরে ধাক্কা লাগে। এরপর আর কিছু বলতে পারি না। মনে হয় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। পরে চোখ মেলে দেখি আমি হাসপাতালে।
দুর্ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে পিচ্ছিল সড়কে দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে রাত তিনটা পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে মারা যাওয়া পাঁচজনের মরদেহ তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানায় রয়েছে। ঘটনাস্থলের নিহত পাঁচজনের নাম এখনো পাওয়া যায়নি।
রমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. ফরহাদুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনায় আহত চারজন ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এদের মধ্যে দুইজনের নাম পাওয়া গেছে। এই দুজন হলেন- নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক অলিউল হাসান জুয়েল (২৭) ও গাইবান্ধার সাদেক আলী (৫৬)। অন্য দুজন অজ্ঞাত।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি