‘মা আমি আর কখনো খেলতে যাব না, তাও তুমি মইরা যাইও না’
‘মা আমি আর কখনো খেলতে যাব না, তাও তুমি মইরা যাইও না।’ ছেলের আকুতি না শুনে ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন এক মা। এতে অসহায় হয়ে পড়েছে দুই শিশু নাফিস (১১) ও নাবিল (৮)। এর দুই বছর আগে তাদের বাবা বাবু সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।
শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসের সামনে রাগ করে মা নাসরিন আক্তার (৩২) ওড়না পেঁচিয়ে ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস নেন। পরে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
জানা গেছে, ২০২০ সালের দিকে নাসরিনের স্বামী বাবু ঢাকা-শেরপুর সড়কে চলাচলকারী শেরপুর চেম্বার অব কমার্সের বাসে সুপারভাইজারের চাকুরি করতেন। ওই সময় এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। সে সময় তারা অন্য মহল্লায় থাকতেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর নাসরিন গৃর্দানারায়ণপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। নাসরিনের শ্বশুরবাড়ি ঢাকার বিক্রমপুর এবং তার বাবার বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা গ্রামে।
নাসরিনের বড় ছেলে নাফিজ জানায়, আমি বাইরে খেলতে গেলে মা প্রতিদিন বকাবকি করতেন। আজও আমি খেলতে যাই। মা আমাকে বকাবকি করেন। পরে মা আমার সঙ্গে রাগ কইরা ঘরের দরজা বন্ধ করে। আর বলতে থাকে আমি ফাঁসি দিয়ে মইরা যামু। তখন আমি দরজা ধাক্কাইয়ে মার কাছে মাফ চাই। আর কোনো দিন আমি বাইরে যামু না, খেলবার যামু না। তারপরও মা দরজা খুলে নাই। পরে আমি জানালার পাশে যাই। এ সময় দেখি মা তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলার চেষ্টা করতাছে। তহন আমি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আইসা স্টিলের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। আমার মা শ্বাস বন্ধ হয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুইলা মইরা যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন শেরপুর সদর থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বসির আহমেদ বাদল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এসপি