কাঞ্চনজঙ্ঘা টি’র বিরুদ্ধে ৬০ একর জমি দখলের অভিযোগ
কাঞ্চনজঙ্ঘা টি এস্টেট নামে এক কোম্পানির বিরুদ্ধে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানিটি ২০ একর জমি কিনে ৮০ একর দখল করেছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
এর প্রতিবাদে পাঁচটি গ্রামের শতাধিক মানুষ শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় উপজেলার শালবাহান মাঝিপাড়ায় মহাসড়কে মানববন্ধন করেছেন। এতে বক্তব্য দেন সিনিয়র আইনজীবী আবু হানিফ, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, শালবাহান ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, বাবুল হোসেন, হাবিবুর রহমান হবি, ভূমি সার্ভেয়ার জামাল বাদশা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কাঞ্চজঙ্ঘা টি এস্টেট এই এলাকায় ২০ একর জমি কিনে ৮০ একর জমি দখল করেছে। এটা এলাকার মানুষ মেনে নেবে না। প্রয়োজনে তারা জমি ফিরিয়ে নিতে রক্ত দেবে। কিন্তু কাগজের বাইরে এক শতক জমিও কোম্পানিকে অবৈভাবে দখল করতে দেবে না। তারা দরিদ্র মানুষের জায়গা-জমি গ্রাস করছে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান না হলে যেকোনো মূল্যে আমরা আমাদের জমি দখল করে নেব।
হায়দার আলী, তোফাজ্জল হোসেন, জালালসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, ১৯৯৪ সালে বনবিভাগ সামাজিক বনায়ন সৃজনের জন্য আমাদের থেকে ৯ বছরের জন্য জমি লিজ নিয়ে ৬০% মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরইমধ্যে বনবিভাগের ৯ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু গাছ না কাটায় আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষত্রিগ্রস্ত হই। এরইমধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা টি এস্টেট আমাদের কয়েকজনের থেকে নামমাত্র জমি কিনে আমাদের ভোগদখল করা সম্পূর্ণ জমি জবরদখল করার চেষ্টা করছে এবং চা বাগান তৈরি করছে। জমিতে অবৈধভাবে সিসি ক্যামেরা, সাইনবোর্ড স্থাপন করে জমিতে প্রবেশ করছে দিচ্ছে না। একইসঙ্গে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও হুমকি দিচ্ছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা টি এস্টেটের হিসাবরক্ষক ফয়সাল আহমেদ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, এ কোম্পানি এখানে ৫২ একর ১৯ শতক জমি ক্রয়সূত্রে মালিক। তবে বনবিভাগ জমির মালিকানা দাবি করে কোম্পানির বিরুদ্ধে যে কয়টি মামলা করেছে, তার প্রতিটি মামলার রায় আমরা পেয়েছি। ৫২ একর ১৯ শতক জমির সব দলিলপত্র রয়েছে। এখন স্থানীয়রা জমির মালিকানা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। আমাদের কোম্পানির মালিক দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলে বিষয়টি নিয়ে বসা হবে। আর আমরাও এ বিষয়ে অভিযোগ করেছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, আমরা উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। আপাতত চা গাছ লাগানো বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।
সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, এই জমি লিজের কোনো বিষয় নয়। সরকার যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংরক্ষিত বন ঘোষণা ও একশ বছরের ব্যবস্থাপনার জন্য চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। পঞ্চগড় জেলার বনবিভাগের জায়গা কেউ দখলের চেষ্টা করলে আমরা আমাদের শক্তি, সামর্থ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় রক্ষা করব।
এমএএস