উত্তাল ঢেউয়ে ভাঙছে কক্সবাজার সৈকত
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগর। এতে সমুদ্র উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে নামতে পর্যটকদের দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা। ঢেউয়ের তোড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে সমুদ্র সৈকতে।
গত দুই দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অন্তত পাঁচটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কবিতা চত্বর ও কলাতলী পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। দুদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্রে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।
জোয়ারের পানি সৈকতে পর্যটকদের জন্য রাখা চেয়ারের জায়গা ডুবিয়ে বিভিন্ন মার্কেটের কাছাকাছি চলে এসেছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে অবস্থিত পুলিশ বক্সটি জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে হেলে পড়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, সমুদ্র সৈকত ভাঙনের অন্যতম কারণ হচ্ছে ভাঙনস্থানে অপরিকল্পিতভাবে সমুদ্রের বালু তুলে জিও ব্যাগ স্থাপন, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেগুলোতে ঝাউবন নিধন, একই সঙ্গে ইসিএ আইন না মেনে সমুদ্র সৈকতের ওপর দখলদারিত্ব চালিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ। এক কথায় সমুদ্র সৈকতের ওপর যে আগ্রাসন চলছে সেটি বন্ধ করা না হলে প্রকৃতি তার অধিকার আদায় করে নিতে আগ্রাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। সমুদ্র সৈকতে যেভাবে ভাঙন তীব্র হয়ে উঠছে, এখান থেকে যেন দখলবাজদের শিক্ষা হয়। যতদ্রুত সম্ভব সমুদ্র সৈকতের ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) ৩০০ মিটারের মধ্যে যত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা আছে সব উচ্ছেদ করে বালিয়াড়ির ওপর চাপ কমিয়ে সমুদ্রের স্বাভাবিক গতিপথ তৈরি করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সৈকতের বিভিন্ন ভাঙনকবলিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে সৈকতে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, সাগর উত্তাল থাকার কারণে পর্যটকদের পানিতে নামতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সচেতনতা অবলম্বনের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সাইদুল ফরহাদ/আরএআর