দিনাজপুরে কেজি প্রতি চালের দামে বেড়েছে ৪ টাকা
উত্তরবঙ্গের শস্য ভাণ্ডারখ্যাত দিনাজপুরে চালের বাজারে সুখবর নেই। এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৪ টাকা। বাজারের সব কিছুর সঙ্গে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষেরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে সব কিছুতেই। ধান-চালের বাজারেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাজারে একদিকে ধানের সরবরাহ কম থাকায় ধানের দাম বাড়ছে। আর অন্যদিকে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা চাল আমদানি করছেন না। আবার অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ। সবমিলিয়ে চালের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে।
জেলার বাহাদুর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিদিনই চালের দাম বাড়ছে। আবার চাহিদা অনুযায়ী চাল দিচ্ছেন না মিলাররা। পাইকারি বাজারে গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে, উনত্রিশ ৫২ থেকে ৫৩ টাকা, আটাশ ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা, পাইজাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ টাকা, সিদ্ধ কাঠারী ১০৪ থেকে ১১০ টাকা ও আতব চাল প্রকারভেদে ৯৬ টাকা থেকে ১১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতেও বাজারে চালের দাম গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে।
বাহাদুর বাজারে চাল কিনতে আসা মনির হোসেন বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। একসঙ্গে অনেক চাল কিনে রাখা সম্ভব হয় না। ৫ থেকে ১০ কেজি করে চাল কিনি। বাজারের সব জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকদিন থেকেই চালের বাজার বেড়েই চলছে। কিন্তু আমাদের আয় তো আর বাড়ছে না।
শহরের বাহাদুর বাজারে চাল কিনতে আসা অটোচালক সুমন ইসলাম পোস্টকে বলেন, চালের দাম মনে হয় এখন প্রতিদিন বাড়ছে। গত দুই দিন আগে আটাশ চাল কিনলাম ৫৫ টাকা কেজি দরে। আজ সেটা ৫৭ টাকা কেজি দরে কিনলাম। বাজারে সব জিনিসের দামের সঙ্গে চালের দামও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ফলে অটো চালিয়ে সংসার চালানো খুব কষ্টকর হচ্ছে।
বাহাদুর বাজারের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স এরশাদ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এরশাদ হোসেন জানান, প্রতিদিনই চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা। খুরচা বাজারে আরও ১-২ টাকা বেড়েছে। একদিকে চালের দাম বাড়ছে অন্যদিকে মিল মালিকরা চাহিদা মতো চাল সরবারহ দিতে পারছেন না । আমরা খুব বিপদে আছি।
জেলার নিলুফা অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী ইসলাম উদ্দীন আহমেদ বলেন, চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মিল চালু রাখতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। ডিজেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আবার বাজারে ধানের সংকট থাকায় ঠিকমতো মিল চালানো যাচ্ছে না। এজন্য বাজারে চালের দাম কেজিতে দুই-এক টাকা বেড়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির তথ্য সঠিক নয়। জেলা খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে। ধান-চালের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে দাম বাড়ছে এ ধরনের একটি গুঞ্জন আছে চালের বাজারে।
ইমরান আলী সোহাগ/আরএআর