সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী পাঠালে ব্যবস্থা
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছেন, চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী পাঠানো বন্ধ না করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা (ডাক্তার) সরকারি হাসপাতাল থেকে ক্লিনিকে রোগী পাঠাবেন না।
রোববার (৩১ জুলাই) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, সমাজের অন্যদের চেয়ে চিকিৎসকরা আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল থাকেন। তাছাড়া তারা হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করে বিকেলে চেম্বারে বসতে পারেন। তারপরও কেউ রোগী ক্লিনিকে পাঠাবেন না।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিধি দ্বিগুন করলেও সংকট শেষ হবে না উল্লেখ করে সচিব বলেন, হাসপাতাল বড় করলেও রোগী কমবে না, কারণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর সেবা আরও ভালো হওয়া দরকার।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, এই হাসপাতালে শিশুদের আইসিইউ দেখলাম। এখানে নবজাতকদের অপরিপক্ক জন্মসহ বেশ কিছু বিষয় প্রতিয়মান হয়েছে। একজন গর্ভবতী মাকে কমপক্ষে তিন বার পরীক্ষা করা প্রয়োজন। যাতে ওই মায়ের শারীরিক অবস্থা এবং শিশুর বেড়ে ওঠা ঠিক রয়েছে কি না তা জানতে পারা যায়। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এগুলোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আসল সমস্যা হচ্ছে সেখানে তারা (মায়েরা) যান না। না যাওয়ার কারণে এই হাসপাতালে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
হাসপাতালের যন্ত্রাংশ বিকল এবং শারীরিক পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটি সত্য, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকে এবং রোগীদের হাসপাতালের বাইরে যেতে উৎসাহিত করে থাকে। সারা দেশেই সরকারি হাসপাতালে সাধারণ চিত্র এমন। তবে এসব যেন আর না হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে বলেন, করোনাকালে স্বাস্থ্যসেবাকে খুব দ্রুত বর্ধিত করা হয়েছে। শিন্তু চাহিদা অনুসারে জনবল বাড়েনি। আমরা চাহিদা শনাক্তের কাজি করছি। এরপর চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।
ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, চিকিৎসকদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে তারা ঢাকামুখী বেশি হতে চান। আমরা জানি ঢাকায় অনেক স্থানে চাহিদারও বেশি চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ গ্রামগঞ্জে অনেক স্থানে চাহিদামতো চিকিৎসক নেই। এগুলো যাতে সমান্তরাল করা যায় সে জন্য কাজ চলছে। এগুলো হলে সংকট কেটে যাবে।
তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি (লেবার), শিশু, আইসিইউ, সিসিইউ, করোনা ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খান, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসানসহ স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই