সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ১৫ বছর পর এল প্রায় ২ লাখ টাকার বিল
ঘূর্ণিঝড় সিডরে দোকান বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিদ্যুতের মিটার খুলে নেয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এর ১৫ বছর পর একই গ্রাহকের নামেই বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় দুই লাখ টাকা! এতে ভোগান্তিতে পড়েছে একটি পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট ভাইজোড়া গ্রামে। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে উপজেলাজুড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮ থেকে ২০ বছর আগে তালতলীর ছোট ভাইজোড়া গ্রামের সড়কের পাশে একটি মুদি দোকান ছিল স্থানীয় বৃদ্ধ আদম আলীর। তৎকালীন তার দোকানটিতে ৩৭৪-২২০৫ নম্বর হিসাবে বিদ্যুৎ-সংযোগ ছিল। ২০০৬ সালে বৃদ্ধ দোকানি আলম মারা যান। এরপর ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানে দেশের উপকূলে। এ সময় বৃদ্ধ আলমের দোকানটি বিধ্বস্ত হয়।
পরে দোকানে থাকা বিদ্যুৎ মিটারটি খুলে নিয়ে যায় তৎকালীন পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। মিটার খুলে নেওয়ার ১৫ বছর পর মৃত আলম আলীর ছেলে আনছার উদ্দিনের চলতি বছরের জুলাই মাসের বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ লাখ ৯১ হাজার ৩২২ টাকা যোগ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যা পরিশোধের শেষ তারিখ আগামী ৪ আগস্ট।
তবে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত স্থানীয় এনায়েত করিমের ছেলে এনামুল করিম ওই দোকানের কাছে গ্যারেজ খুলে অটোরিকশা চার্জ দেওয়ার ব্যবসা করেছিলেন। এ সময় এনামুল করিম বিদ্যুৎ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় মৃত আদম আলীর নামের মিটারের স্থান পরিবর্তন করে সংযোগ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন দেনা-পাওনায় জর্জরিত হয়ে ২০১৮ সাল থেকে এনামুল করিম এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে গ্যারেজ ব্যবসায়ী এনামুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
দোকানি আদম আলীর ছেলে আনসার আলী বলেন, আমার বাবা ১৯৯৮ সাল থেকে আমার সৎমাকে নিয়ে দোকানঘরের পেছনেই আলাদা থাকতেন। আমরা তিন ভাই আলাদা সংসার করতাম। ২০০৬ সালের ১০ নভেম্বর বাবা মারা যান। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের কারণে বাবার দোকানঘর ভেঙে যায়। এর কিছুদিন পরই বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে মিটারটি খুলে নিয়ে যায়। এখন দেখি আমার নামে প্রায় দুই লাখ টাকার বিল এসেছে।
তিনি আরও বলেন, অফিসের লোক কাকে মিটার দিছে, আমি তাও জানি না। বর্তমানে আমি ও আমার অন্য ভাইয়েরা নিজ নিজ নামে মিটার এনে ব্যবহার করছি।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কলাপাড়া জোনাল অফিসের কর্মকর্তা সজিব পাল বলেন, গ্রাহক আদম আলী যেহেতু মারা গেছেন, তাই তার নামের বিদ্যুৎ বিল ওয়ারিশ সূত্রে ছেলে আনসার উদ্দিনের নামে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী আনসার আলীকে অফিসে আসতে বলেছি। এ বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখব। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
খান নাঈম/এনএ