মোটরসাইকেল কিনে দেয়নি পরিবার, অভিমানে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর বিষপান
পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় অভিমানে সাব্বির হোসেন (১৮) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিষপান করেছে। বুধবার (২৭ জুলাই) রাত পৌনে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ।
ছাব্বির হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের হায়দারপুর (বিজিবি-৬) ক্যাম্প এলাকার মৃত রাশেদুল ইসলামের ছেলে এবং চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিবার রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন ভাই-বোনের মধ্যে ছাব্বির ছিল মেজ। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে তিন ভাই-বোন নানাবাড়ি হায়দারপুরে থাকতেন। ছাব্বির চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
কয়েক দিন ধরে সে মায়ের কাছে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না করে। টাকা না থাকায় মা মোটরসাইকেল কিনে দিতে পারেনি। এরই জের ধরে বুধবার রাত ৮টার দিকে বিষ কিনে পান করে ছাব্বির। অসুস্থ হয়ে পড়লে নেওয়া হয় হাসপাতালে। রাত পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ছাব্বিরের নানা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দুই মাস পর ভাতার টাকা তুলে মোটরসাইকেল কিনে দিতে চেয়েছিলেন নানা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাব্বিরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। অতিরিক্ত মাত্রায় বিষপান করেছিল। তার পাকস্থলি ওয়াশ করে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে মোটরসাইকেল কিনে দিতে পারেনি। এতেই অভিমানে বিষপান করেছে ছাব্বির হোসেন। মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফজালুল হক/এসপি