ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গুলিতে শিশু নিহত
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় পুলিশের গুলিতে আট মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবর্ষনের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
বুধবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবালকে বাচোর ইউনিয়নের ফুটিয়াটুলি এলাকায় কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন এলাকাবাসী।
নিহত শিশুটির নাম সুরাইয়া আক্তার। সে বাচোর ইউনিয়নের মীরডাঙ্গী গ্রামের বাদশা মিয়া ও মিনারা বেগমের ছোট মেয়ে। গুলিতে শিশুটির মাথা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে (ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে)।
সংশ্লিষ্ট ওই ভোটকেন্দ্রে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক সংবাদকর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহের কাজে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। নিহত শিশুকে তার মা কোলে নিয়ে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা দেখতে এসেছিলেন। হঠাৎ দুপক্ষের হট্টগোলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ইভিএমসহ ভোটের বাক্স নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকরা পুলিশকে বাধা দেন। কিছু সমর্থক পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তখন কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এর একটি গুলি শিশুটির মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলেই সে মৃত্যুবরণ করে।’
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা খতিবর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউপি সদস্য প্রার্থী বাবুল তালা প্রতীকে ৪৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আজাদ পেয়েছেন ৪৪২ ভোট। বাবুল তার লোকজন নিয়ে আনন্দ মিছিল করার সময় আজাদের লোকজনের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ গুলি চালায়।
রাণীশংকৈল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল লতিফ শেখ জানান, এ ঘটনায় রাণীশংকৈল থানার ওসি, এক এসআই ও এক কনস্টেবলকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে আনেন।
পুলিশের গুলিতে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদে ওই এলাকার আঞ্চলিক সড়কটি কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন।
সামাদ/আরএআর/এনএ