বরিশালে মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ
১০ বছর পর ঘোষিত বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। বাস মালিক ও শ্রমিক নেতা, বিবাহিত, অছাত্রদের নিয়ে গঠিত কমিটি বাতিল করে ছাত্রদের নিয়ে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। মিছিলে সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়কের সন্তানসহ ছবি, দুই যুগ্ম আহ্বায়কের সস্ত্রীক বিয়ের ছবি দিয়ে তৈরি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মহানগর ছাত্রলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভকারীরা বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী বলে জানা গেছে।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রনেতা রেজা নূর রহমান নিয়নের নেতৃত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র রোদোয়ান ইসলাম সোহান, গ্লোবাল ভিলেজ ইউনিভার্সিটির ছাত্র শোভন আহমেদ, আব্দুল আলিম, মেহদি হাসান, তানভীর আহমেদ, প্রিন্স সরদার, আব্দুল আলিম, ইমরান হাওলাদার, আবু তালহা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল ১০ বছর পর হলেও সঠিক নেতৃত্ব তৈরি হবে এর মাধ্যমে। অথচ দেখলাম কমপক্ষে ৪০ বছরের অছাত্র, দুই-তিনটা সন্তানের বাবা, বিবাহিতদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা এখানে নেতৃত্বে রয়েছেন তারা কেউ ছাত্র না। বাস মালিক গ্রুপের নেতা হয়েছেন আহ্বায়ক।
বক্তারা বলেন, সদ্যঘোষিত কমিটিতে আহ্বায়ক পদপ্রাপ্ত রইজ আহমেদ মান্না একজন শ্রমিক নেতা। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন। তার সন্তান ক্লাস সেভেনে পড়ে। যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম বিবাহিত, আরিফুর রহমান শাকিল বিবাহিত। তাদের ছাত্রত্ব নেই। ছাত্র রাজনীতির বয়স তাদের নেই। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ভেঙে বুড়োদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কার স্বার্থে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে তা আমরা জানি না। আমরা বলতে চাই, প্রকৃত ছাত্রদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। ঘোষিত কমিটি এই অঞ্চলের কোনো ছাত্রলীগ নেতা মানে না।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে কোনো বিবাহিত, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, মাদক কারবারি, সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না। অথচ ঘোষিত কমিটিতে এর সবকিছুই রয়েছে। রইজ আহমেদ মান্নার বয়স ৩২ বছরের কাছাকাছি, তিনি গত ১৮ আগস্ট বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা মামলার আসামি ছিল। আর বিসিকে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাতেও তিনি আসামি ছিলেন। আর এসব থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি বরিশাল মহানগর বিএনপির শীর্ষ এক নেতার প্রকাশিত পত্রিকার সহ-সম্পাদকও হয়েছেন।
এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির কেউ তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ৩২ সদস্যের কমিটির তালিকা জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর