এ বছরই ভূমি ও গৃহহীন পরিবারমুক্ত হবে রংপুর
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেছেন, দেশ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারমুক্ত হতে চলেছে। অন্যান্য জায়গার মতো রংপুরেও গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য আবাসন নিয়ে কাজ করছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরেই রংপুর জেলার কোথাও গৃহহীন এবং ভূমিহীন থাকবে না। সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ হলরুমে জমিসহ ঘর প্রদান অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান এসব কথা বলেন।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের আওতায় রংপুরসহ দেশের পাঁচটি জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে ২৬ হাজার ২২৯টি জমিসহ ঘর হস্তান্তর করেন।
তারাগঞ্জপ্রান্তের অনুষ্ঠানে ডিসি আসিব আহসান বলেন, আজ রংপুর জেলায় ৬২৪টি পরিবারকে জমিসহ নতুন ঘর হস্তান্তর করা হচ্ছে। গরিব, ভূমিহীন, আশ্রয়হীন দুস্থ মানুষের জন্য গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে পুণর্বাসন করা শুরু করেছিলেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন বলেই আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যারা উপকারভোগী আছেন তাদের ঘর নির্মাণ করে জমিসহ পৌঁছে দিতে পেরেছি। দেশ আজ ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হওয়ার পথে। এর পুরো কৃতিত্ব বঙ্গবন্ধু কন্যার।
তিনি বলেন, রংপুর জেলায় তিন ধাপে মোট ৩ হাজার ৩৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব ঘরে রয়েছে দুটি শয়নকক্ষ, বারান্দা, রান্নাঘর ও শৌচাগার। এ ছাড়া প্রত্যেক পরিবারের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। প্রত্যেককে তার জমির দলিল নিবন্ধন ও নামজারি করে দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, ইউএনও রাসেল মিয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ বোস্তামী, সাবিনা ইয়াছমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইলোরা ইয়াসমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. আলী হোসেন, উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে সাতটিসহ তারাগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ৪০৭টি পরিবার জমিসহ গৃহ পেয়েছে। উপকারভোগী পরিবারগুলোর হাতে জমির দলিলসহ উপহারের ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
চাবি হাতে পেয়ে জেলেখা বেগম বলেন, আল্লায় দেলে শেখ সাইবের বেটি মোক পাকার ঘর, জমি দেইল। মুই অ্যালা শান্তিতে নিন (ঘুম) পাইরবার পাইম। যায় মোক ডাকে আনি ঘরের চাবি-দলিল দেইল, তার আল্লাহ ভালো করবে। মুই সবার জন্যে দোয়া করিম। তোমরা সারা জীবন শান্তিতে থাকমেন। হামরা খুব গরিব আছনো, থাকার মতো কোনো জমিজমা ঘর আছিল না। আজই হামার সোগে হইল।
এদিকে তারাগঞ্জের মতো জেলার অন্যান্য উপজেলাতে উপকারভোগী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের মধ্যে জমির দলিলসহ নতুন গৃহের চাবি হস্তান্তর প্রদান অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই