হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছি : শাওন
জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে স্থানীয় দুটি মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের নিয়ে এ আয়োজন করা হয়।
বেলা ১১টায় হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও তার দুই ছেলে নিশাত হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন, হুমায়ূনের ভক্ত, হিমু পরিবহনের সদস্যরা নুহাশ পল্লীর লিচু তলায় হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকেদর বলেন, ক্যান্সার হাসপাতাল নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের যে স্বপ্ন ছিল, সেটা পূরণ করার জন্য যে শক্তি যে সামর্থ্য দরকার হয় সেটা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তাও আমার নেই। সমষ্টিগতভাবে আমরা সবাই যদি চেষ্টা করি হয়তো বা হবে। সে ধৈর্যটা আমার আছে, সে ধৈর্য ধরে আমি ১০ বছর অতিক্রম করেছি। সেই স্বপ্নটা আমি দেখেছি, দেখছি। এটা কম সময় না। আমি চাইলে একটা ছোটখাট হাসপাতাল করতে পারি। সেটা বাংলাদেশে যে রকম ৮/১০টা হাসপাতাল আছে সে রকম হবে না। সেই জোড় আমার নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে অনেক বড় স্বপ্নের আগেও অনেকগুলো ছোট ছোট স্বপ্ন থাকে। সেই স্বপ্নগুলো যে একটু একটু করে পূরণ হচ্ছে, সেটার ভালো একটা খবর দেই। হুমায়ুন আহমেদের নিজ গ্রামে ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠ, যেটার কথা আমি প্রতিবারই বলেছি সেটি নিয়েও তার একটি স্বপ্ন ছিল। এ স্কুলটি ২০২০ সালে নিম্ন মাধ্যমিক (অষ্টম শ্রেণি) পর্যন্ত এমপিওভুক্ত ছিল। কিন্তু সুখবর হলো ওই স্কুলটি হুমায়ূন আহমেদের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকীর মাসেই ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে। সেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার পাশাপশি বিভিন্ন বিষয়ে জেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানের মধ্যে মেধার স্বাক্ষর রাখছে। এটা আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। এ রকম ছোট ছোট স্টেপ দিয়ে আমরা সামনের দিকে আগাব।
আরও পড়ুন : হুমায়ূন আহমেদ : গল্প, গদ্য ও জনপ্রিয়তা
হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন নিয়ে শাওন বলেন, এটা নির্মাণ আমাদের পক্ষে সম্ভব। এটা হবে। এটা নুহাশ পল্লীতেই হবে। হুমায়ূন আহমেদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সেগুলো খুব সুন্দরভাবে সংগৃহীত আছে। তার হাতে আঁকা ছবিগুলো অনেক দিন ধরে নিউইয়র্কের এক ব্যক্তির কাছে আটকে ছিল। সম্প্রতি সেই ছবিগুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা সব ছবিগুলো হাতে পেয়েছি। এর মধ্যে হুমায়ূন আহমেদের সন্তানদের কাছে, আমার কাছে যা ছবি আছে সেগুলো হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘরে থাকবে। হুমায়ূন আহমেদের হাতের লেখা স্ক্রিপটগুলো যেগুলো বিভিন্ন প্রকাশকদের কাছে ছিল, সেগুলো তারা জাদুঘর দান করবেন।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি ও অন্য প্রকাশের মালিক মাজহারুল ইসলাম বলেন, হুমায়ূন আহমেদের পরিবার থেকে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি তাদের পাশে থাকবে।
এ সময় মিলেনিয়াম পাবলিকেশন্সর মালিক এস এম লুৎফর রহমান, ধ্রুব পদ প্রকাশনীর মালিক আবুল বাশার ফিরোজ শেখ, মাতৃভাষা প্রকাশের মালিক নেছার উদ্দিন আইয়ুব, অনিক পাবলিকেশন্সর মালিক মাহতাব উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শিহাব খান/আরএআর