বুয়েটে ভর্তি হবেন কি না, শঙ্কায় আবরারের ছোট ভাই
বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজও বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু নানা শঙ্কায় এখনো ভর্তি হননি তিনি। ভাইয়ের হত্যাকারীদের স্বজন ও বন্ধুদের মুখোমুখি থাকা এবং হলের পরিবেশ ঠিক না হওয়ার শঙ্কায় ভর্তি হবেন কি না, এ নিয়ে দোটানায় রয়েছেন তিনি ও তার পরিবার।
সোমবার (৪ জুলাই) সকালে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আবরার ফাইয়াজকে ফুলের সংবর্ধনা জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল। সংবর্ধনা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমনটা জানিয়েছেন তার বাবা বরকত উল্লাহ।
তিনি বলেন, যেখানে এক ছেলের জীবনের গল্প শেষ হয়েছে নির্মমভাবে, সেখানেই আরেক ছেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। যদি আবারও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় ছোট ছেলের ক্ষেত্রে। একটু ভয় তো থেকেই যায়। তাই নানা শঙ্কায় ভর্তি হবে কি না, সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। কোরবানির ঈদের সময় স্বজনদের নিয়ে বসব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে কালচার, তা অনুকূল নয়। একজন বাবা হিসেবে চাই যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কথা বলার স্বাধীনতা থাকে।
আবরার ফাইয়াজ বলেন, বুয়েট কর্তৃপক্ষ যে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, ব্যাপারটা তেমন নয়। আসলে ভাই হত্যাকারীর স্বজন ও বন্ধুরা তো সেখানে থাকতে পারেন। সেই পরিবেশ নিয়ে তাই শঙ্কা কাজ করছে। তা ছাড়া ভাই হত্যার পর শুধু শেরেবাংলা হলের পরিবেশটা ভালো হয়েছে। কিন্তু সেখানে আরও হল রয়েছে। সেগুলোর পরিবেশ তো আগের মতোই রয়েছে। এসব নানা কারণে বুয়েটে আমার ভর্তিটা এখনো অনিশ্চিত রয়েছে।
শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাজনীতি আগে বন্ধ করতে হবে আবেদন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে আগে। এগুলো বন্ধ হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটে সুযোগ পাওয়ায় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। আমি তার ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনা করছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদকে হত্যার দায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
রাজু আহমেদ/এনএ