জাল টাকা ব্যবসার মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা আল-আমিন কারাগারে
অবৈধ জাল টাকার ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগের মামলায় এএসআই আল-আমিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল ইসলাম এ আদেশ দেন। পরে পুলিশি পাহারায় আসামিকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামি আল-আমিন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেল্টা ২১ কন্ট্রোলরুম প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রংপুরে অবস্থানের সময়ে জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলায় জামিন নিতে আদালতে এসেছিলেন এএসআই আল-আমিন।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) ট্রাফিক বিভাগে থাকাকালীন এএসআই আল-আমিন অবৈধ জাল টাকার ব্যবসা করতেন। গত বছরের ৫ জুলাই তার পূর্ব পরিচিত দুই বন্ধু রংপুর নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার জিসান ও মুলাটোল এলাকার সোহানকে ফোন করে নগরীর সোডাপীর এলাকার একটি হোটেলে ডেকে নেন আল-আমিন। এরপর সেখানে পকেট থেকে ৫০০ টাকার এক বান্ডিল জাল নোট অর্ধেক দামে বিক্রি বা চালানোর প্রস্তাব দেন। কিন্তু জিসান ও সোহান জাল নোট নিতে আপত্তি জানালে এএসআই আল-আমিন জোরপূর্বক ৫টি নোট তাদেরকে হাতে দিয়ে তা চালানোর ব্যবস্থা করতে বলেন।
এ ঘটনার পর ওই দিন রাতেই দুই বন্ধু জিসান ও সোহান মিঠাপুকুর যান। সেখান থেকে রংপুরে ফেরার পথে নগরীর দমদমা এলাকায় পুলিশ তাদের মোটরসাইকেল আটক করে তল্লাশি করেন। এসময় তাদের দুজনের কাছ থেকে এএসআই আল-আমিনের দেওয়া অবৈধ ৫টি জাল নোট জব্দ করে পুলিশ। এরপর তাদের দুজনকে তাজহাট থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ট্রাফিক পুলিশের এএসআই আল-আমিনের নাম বলে।
পরে এ ঘটনায় তাজহাট থানা পুলিশের এসআই আসাদুল বাদী হয়ে জিসান, সোহান ও এএসআই আল-আমিনের নাম উল্লেখ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে। আসামি জিসান ও সোহান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এতে জাল টাকা এএসআই আল-আমিন তাদের দিয়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছে।
পুলিশ পুরো ঘটনাটি তদন্ত শেষে এএসআই আল-আমিনসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চার্জশিট দাখিল করেন। মঙ্গলবার (২১ জুন) ওই মামলায় আসামি এএসআই আল-আমিন ঢাকা থেকে রংপুরে এসে আদালতে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি আব্দুল মালেক জানান, জাল টাকার ব্যবসার মামলার প্রধান আসামি এএসআই আল-আমিনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। পুলিশি তদন্তে প্রাথমিকভাবে আসামির বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগ প্রমাণিত। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তার জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। বিজ্ঞ আদালত সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠনোর আদেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস