দেবে গেল সাড়ে ৩ কোটি টাকার সেতু
টাঙ্গাইলে লৌহজং নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেবে গেছে নির্মাণাধীন সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতু। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়ডোমা এলাকার লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি দেবে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি মাঝখানে দেবে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেছেন। কয়েকজন শ্রমিককে সেতু নির্মাণে কাজ করতে দেখা গেছে।
পৌরসভার বেড়াডোমা এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগে লৌহজং নদীর ওপর বেইলি ব্রিজ ছিল। সেটিও দুবার ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এই সড়ক ও সেতু ব্যবহারকারীদের।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীনে টাঙ্গাইল পৌরসভা সেতুটির কাজ বাস্তবায়ন করছে। ৮ মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্রিক্সস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড ও দি নির্মিতি নামের দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। গত ১১ মে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে পুরোপুরি কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান দুটি। এক মাস আগে সেতুর মূল ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছে।
রেলিং ও অ্যাপ্রোচ অংশের কাজ শেষ হয়নি। ইতোমধ্যেই গত রাতে সেতুটির নির্মাণ ক্রুটির কারণে সেন্টারিং সরে গিয়ে মাঝেখানে দেবে গেছে। ফলে নির্মাণাধীন সেতুটি আর কোনো কাজেই আসছে না। এতে এক দিকে সরকারের সাড়ে তিন কোটি টাকা বানের জলে ভেসে যাচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিম টাঙ্গাইলের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ইতোপূর্বে এ নদীর ওপর বেইলি সেতু বারবার ভেঙে পশ্চিম টাঙ্গাইলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। নির্মাণাধীন ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে বন্যার পানিতে সেতু দেবে গেছে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে সেতুর কাজ শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোনো কথাই শুনে না। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কয়েক বছরের জন্য বেড়ে গেল।
টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী সিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেতু কেন এমন হলো তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিজিৎ ঘোষ/ওএফ