ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় বাবার মৃত্যু
সাতক্ষীরায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্বজনদের হামলায় আনছার আলী (৬৮) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। রোববার (১২ জুন) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জুয়েল হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত আনছার আলী সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামের মৃত এছেম আলী সরদারের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল হোসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন আলীর ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, জমি নিয়ে বিরোধে লাবসা ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামের মৃত এছেম আলী সরদারের প্রথম স্ত্রীর ছেলে আনছার আলীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে হোসেন আলীর বিরোধ চলে আসছিল। হোসেন আলী স্থানীয় ইউপি সদস্য।
৯ জুন রাত ৮টার দিকে আনছার আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বাইপাস সংলগ্ন নিজ মৎস্য ঘেরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ঘেরের বেড়িবাঁধের মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে মেম্বার হোসেন আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে রুবেল হোসেন, জুয়েল হোসেন ও জুলু হোসেন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজ্জাকের ওপর হামলা করেন। রাজ্জাক অচেতন হয়ে পড়লে তার বাবা আনছারী আলী ছেলেকে রক্ষা করতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এসময় রুবেল হোসেন তার বুকে লাথি মারেন। এতে আনছার আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর হোসেন আলী এবং তার অন্য দুই ছেলে জুয়েল ও জুলু আনছার আলীকে মারধর করেন। পরে তারা মৃত ভেবে তাকে ফেলে রেখে যান।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা আব্দুর রাজ্জাক এবং তার বাবা আনছার আলীকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। গুরুতর আহত আনছার আলীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনছার আলী মারা যান।
এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য হোসেন আলী, তার ছেলে রুবেল হোসেন ও জুলু হোসেন পলাতক রয়েছেন।
নিহতের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেম্বার হোসেনের নেতৃত্বে তার তিন ছেলে আমাকে প্রায় মেরেই ফেলেছিল। আমার বাবা তাদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তাদের হামলায় মারা গেছেন। বাবাকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিত অধিকারী বলেন, মারপিটের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। যেহেতু আহতদের মধ্যে আনছার আলী মারা গেছেন, তাই মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। আসামিদের মধ্যে জুয়েল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর