অপহরণ করে ১৩ দিন ধর্ষণ-ভিডিও ধারণ, মামলার পর খুনের হুমকি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অপহরণের পর ১৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর (১৮) মা। তবে অপহরণকারী মো. নুর আলম আরিফকে (২৮) এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে ওই তরুণীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন। যার নম্বর ১০।
পলাতক মো. নুর আলম প্রকাশ আরিফ বসুরহাট পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের করালিয়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে।
তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই তরুণী স্থানীয় একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আরিফ তাকে ২০১৯ সাল থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন এবং বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতেন। তরুণীর বাবা প্রবাসী হওয়ায় ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি তরুণীর মা কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ জমা দিলে আর বিরক্ত করবেন না বলে ৩০০ টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষর করেন আরিফ।
তবে গত ২৫ মে সন্ধ্যায় তরুণীর বাড়ির সামনে থেকে আরিফ তাকে অপহরণ করে। এরপর টানা ১৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে। এ ছাড়া তরুণীর ব্যবহৃত আইফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান আরিফ। পরে আদালতের মাধ্যমে তরুণীর মা আরিফকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত তরুণীকে উদ্ধার করে এবং আদালতের মাধ্যমে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। এরপর অভিযুক্ত আরিফ ধারণকৃত ভিডিও তরুণীর নিকটাত্মীয়ের মোবাইলে পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে ভুক্তভোগীর মা মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর মা (৩৫) ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছে আরিফ। এ ছাড়া ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছে যা বর্তমানে আমাদের নিকটাত্মীয়ের মোবাইলে পাঠাচ্ছে। আমরা মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। এ ছাড়া আরিফ আমাদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এখনো আসামি ধরতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে আদালতের সার্চ ওয়ারেন্ট পাওয়ার পর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. এনামুল হক অভিযান চালিয়ে অপহৃত তরুণীকে উদ্ধার করে এবং আদালতের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় দেয়।
তিনি আরও বলেন, গত মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে ভুক্তভোগীর মা অভিযোগ করলে আমরা তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করি। অভিযুক্ত আরিফকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হাসিব আল আমিন/আরআই