টানা দ্বিতীয়বার কানাডার এমপিপি হলেন বাংলাদেশি ডলি
টানা দ্বিতীয়বার অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল সরকারের এমপিপি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি ডলি বেগম। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে কানাডায় নতুন ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি।
জানা গেছে, ডলিই প্রথম কোনো বাংলাদেশি-কানাডিয়ান রাজনীতিবিদ যিনি টানা দুইবার এমপিপি নির্বাচিত হলেন। ডলি বেগমের প্রাপ্ত ভোট ১৫ হাজার ৯৫৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রগ্রেভি কনজারভেটিভ পার্টির ব্রেট স্নিডার পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৩৬ ভোট আর তৃতীয় হয়েছেন লিবারেল পার্টির লিসা প্যাটেল। তার প্রাপ্ত ভোট ৬ হাজার ৩৫৬। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ভোট বেশি পেয়ে ডলি বেগম নির্বাচিত হয়েছেন।
ডলি বেগম তার বিজয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে বলেন, ২৩ বছর আগে কানাডা এসেছিলাম। তখন ইংরেজি জানতাম না। তাই স্কুলে যেতে চাইতাম না। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আপনারাই আমাকে তৈরি করেছেন।
তিনি বলেন, কানাডায় রাজনীতি করতে আমার মা সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, সহায়তা দিয়েছেন। এ কারণেই আমি রাজনীতিতে কিছু করতে পারছি।
বৃহস্পতিবার অন্টারিও প্রদেশের স্কারবো সাউথওয়েস্ট আসন থেকে তার নির্বাচিত হওয়ার খবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আরও দুই বাংলাদেশি কানাডিয়ান প্রার্থী। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহিন আলিম ইটোবিকো-লেকশোতে নির্বাচনী লড়াই করেছেন। তিনি এনডিপির প্রার্থী ছিলেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৮ হাজার ৫৯৫। তিনি তার আসনে তৃতীয় হয়েছেন। এছাড়া ওকভিল নর্থ বারলিংটন থেকে লিবারেল পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কানিজ মৌলি। তিনি ১৫ হাজার ৭৬২ ভোট পেয়েছেন। বিজয়ী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থীর চেয়ে পাঁচ হাজার ভোট কম পেয়েছেন তিনি।
ডলি বেগম মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের বাজরাকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষে মনুমুখ পিটি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ২০১২ সালে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন থেকে উন্নয়ন, প্রশাসন ও পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। পড়ালেখা শেষ করার পর সিটি অব টরেন্টোতে প্রায় ১০ মাস কাজ করেন। তিনি রিসার্চ অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন দ্য সোসাইটি অব এনার্জি প্রফেশনালসে।
ডলি জানান, মনুমুখ পিটি হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও বেশি দিন পড়া হয়নি। চলে আসতে হয় কানাডায়। কানাডায় এসেই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন বাবা রাজা মিয়া। প্রবাস জীবনের শুরুতেই কঠিন হোঁচট খেতে হয়। সংসারে নেমে আসে টানাপোড়েন। তাতে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেননি মা জবা বেগম। ভাই মহসিন মিয়া ডলির চেয়ে আড়াই বছরের ছোট। তিনি এখন হোটেল ও আবাসন খাতে কাজ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ জুন কানাডার অন্টারিও প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে স্কারবরো সাউথ ওয়েস্ট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন ডলি বেগম। কানাডার রাজনীতিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কারও এমন সাফল্যের ঘটনা এটাই প্রথম।
ওমর ফারুক নাঈম/এসপি