ধর্ষণচেষ্টার শাস্তি ৫ বার জুতাপেটা, লাখ টাকা জরিমানা
বরগুনার আমতলীতে কোচিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে অভিযুক্ত ব্যক্তির হাতে কামড় দেয় ওই স্কুলছাত্রী। পরে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।
পরে সালিস বৈঠকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অভিযুক্ত আব্বাস খলিফাকে (৫০) ৫ বার জুটাপেটা করে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। অভিযুক্ত আব্বাস খলিফা (৫০) আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানী এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন লন্ড্রি ব্যবসায়ী।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছত্তার মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মেয়েটির পরিবার গরিব, তাই তারা মামলা করতে রাজি হয়নি। আমরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।
ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে সন্ধ্যায় আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানী স্লুইচ গেট এলাকায় কোচিংয়ে পড়তে যায় ষষ্ঠ শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রী। রাত ৯টার দিকে কোচিং ছুটি হওয়ার পর সে বাড়ি ফেরার পথে আব্বাস খলিফা তাকে রাস্তার মধ্যে গতিরোধ করে। এরপর তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই স্কুলছাত্রী আব্বাসের হাতে কামড়ে দিয়ে চিৎকার দেয়। পরে প্রতিবেশীরা ও মেয়েটির মা এগিয়ে এলে আব্বাস খলিফা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ২৯ মে স্থানীয় এক ব্যক্তির ঘরে সালিস বৈঠকে বসে। পরে একই দিন রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও কয়েকজন স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত আব্বাস খলিফাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও ৫ বার জুতাপেটার বিনিময়ে বিষয়টি মিমাংসা করে।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ, মামলা করে আব্বাসের সঙ্গে আমরা পারব না। তার অনেক টাকা-পয়সা ও প্রভাব। তাই এলাকার বর্তমান মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিস বৈঠকে বসে বিষয়টি সমাধান করেছেন।
এ বিষয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দুর্বারের সভাপতি জালাল আহম্মেদ বলেন, যেকোনো অপরাধের বিচারের জন্য আইন আদালত, পুলিশ প্রশাসন রয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার মতো জঘন্য অপরাধের দায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এতে পার পেয়ে গেল অপরাধী। এমনটা হতে থাকলে অপরাধ ও অপরাধী দুটোই বেড়ে যাবে। টাকা দিয়ে সব মীমাংসা হয়ে যাবে। আইন বলতে কিছুই থাকবে না।
আমতলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রনজিৎ সরকার বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরএআর