সন্তানের জন্য দুধ কিনে বাড়ি ফেরা হলো না বাবার
যশোরে শিশুসন্তানের জন্য দুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে আফজাল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। রোববার (২৯ মে) রাত ৮টার দিকে শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে নেওয়ার আধা ঘণ্টা পর আফজাল হোসেনের মৃত্যু হয়। তিনি শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার কবিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া সোলায়মান হোসেনের ছেলে।
নিহতের বাবা সোলাইমান হোসেন বলেন, শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে আমার একটি চায়ের দোকান আছে। আফজাল আমার দোকানেই ছিল। রাত ৮টার দিকে সে তার ছয় দিনের শিশুপুত্রের জন্য দুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। চাতালের মোড়ের পুকুরপাড়ে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় দুটি বোমার শব্দ শোনা যায়। পরে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আফজাল দিনমজুর ছিল। পাশাপাশি আমার চায়ের দোকানে বসে দোকানদারি করতো। ছয় দিন আগে তার একটি পুত্রসন্তান হয়। আরও দুটি ছেলে আছে আফজালের।
স্থানীয়রা জানান, কিছু দিন আগে নাজির শংকরপুর কোল্ড স্টোরেজ মোড়ের সুজন ওরফে ট্যারা সুজনের সঙ্গে আফজালের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সুজনকে মারধর করেন আফজাল। প্রতিশোধ নিতে সুজন ও তার গ্রুপের সদস্যরা আফজালকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। সুজনের নামেও একাধিক মামলা আছে থানায়। রোজার কয়েকদিন আগে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান।
রমজান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি নাজির শংকরপুর জিরো পয়েন্টে ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনটি ইজিবাইকে এসে ১৪-১৫ জন চাতালের মোড়ের পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আফজাল পৌঁছানো মাত্রই তাকে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেন তারা।
এ সময় চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে গেলে পরপর দুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে একটি রিকশায় করে আফজালকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। আধা ঘণ্টা পর আফজালের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় ট্যারা সুজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছেন ওই এলাকার লোকজন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহান জানান, রোগীর মাথা ও ঘাড়ের পেছনে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, নাজির শংকরপুর চাতালের মোড়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আফজাল নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ওই এলাকায় পুলিশি অভিযান চলছে।
জাহিদ হাসান/আরএআর