নাটোরে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৭, আহত ২০
নাটোরের বড়াইগ্রামে যাত্রীবাহী দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (০৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ন্যাশনাল ট্রাভেলস এবং বনপাড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া সিয়াম ট্রাভেলস বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে পৌঁছালে তাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন মারা যান। এছাড়া ২০ জন আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, স্থানীয় আমেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে সাতজন মারা গেল।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী রেঞ্জের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম জানান, দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে শিশুসহ দুইজন নারী ও পাঁচজন পুরুষ রয়েছে। তাদের সবার পরিচয় পাওয়া গেছে।
তারা হলেন- নাটোর সদর উপজেলার পাইকের দোল গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে সাদিয়া খাতুন (১২) ও ছেলে কাওসার আহমেদ (১৮), লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোহনা আক্তার মিলি (২৫) ও চাঁপাইনবাগঞ্জের মশিউর রহমান (২৫), টাঙ্গাইলের ভানু প্রামাণিকের ছেলে জলিল (২৫), মাগুরার মিজানুর রহমান (৩০) ও নাটোর সদর উপজেলার আলমগীর হোসেন (৪৮)।
নিহতদের মধ্যে সাদিয়া ও কাওসার আহমেদ সিয়াম পরিবহনের যাত্রী ছিল। তাদের মা ওই বাসে ছিলেন এবং অক্ষত আছেন। কাওসার আহমেদ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল। মোহনা আক্তার মিলি ও মশিউর রহমান ন্যাশনাল ট্রাভেলের যাত্রী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার মহিষভাঙা এলাকায় ‘গাজী অটো রাইস মিলের’ সামনে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল পরিবহনের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা সিয়াম পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ন্যাশনাল পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই মিলের সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অপর একটি ট্রাককে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাস ও ট্রাক উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৬ জন নিহত হন। পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে নেওয়ার পর আরও এক যাত্রী মারা যান।
এদিকে বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে। একইসঙ্গে স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
তাপস কুমার/এসপি