গাজীপুরে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ, জট নেই
স্বজনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। লাখ লাখ মানুষের ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিআরটি প্রজেক্টের কাজ চলমান থাকায় যানজটের বড় শঙ্কা ছিল এ মহাসড়কে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে অনেকটা স্বস্তি নিয়ে ফিরছে মানুষ।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর প্রবেশপথ আব্দুল্লাহ্পুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যানবাহনের ধীর গতি লক্ষ্য করা গেছে। এ মহাসড়কে বিআরটি প্রজেক্টের কাজ চলমান থাকা ও নির্মাণসামগ্রী মহাসড়কের ওপর রাখায় কোথাও কোথাও মহাসড়ক সরু হয়ে গেছে। এতে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দূরপাল্লার বাস, খোলা ট্রাক, পিকআপ, লোকাল বাস, মিনিবাসে যাত্রী উঠানামা করানোয় স্বল্প সময়ের জন্য যানজট তৈরি হচ্ছে। মুহূর্তেই পুলিশি তৎপরতায় স্বাভাবিক হচ্ছে মহাসড়ক। গাজীপুর মহানগর ও জেলা পুলিশের একাধিক টিম মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করছে। তবে বাসচালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীরা।
পরিবার নিয়ে টঙ্গীর মাছিমপুর এলাকায় বাসা ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি কারখানায় সুপারভাইজার পদে কাজ করেন মাসুম শেখ। ঈদযাত্রার দুর্ভোগের ভয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তিনি। তার দাবি, বছরের অন্যান্য সময় দেড়শ থেকে দুইশ পঞ্চাশ টাকা ভাড়ায় ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাওয়া যায়। এবারে ঈদযাত্রায় সেই ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা হাঁকছেন বাসচালকরা। কোনো দামাদামিও করা যাচ্ছে না। এটাও এক ধরনের অন্যায়।
একই অভিযোগ করেছেন কিশোরগঞ্জগামী অপর গার্মেন্টস শ্রমিক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভাড়া না মিটিয়ে মালেকের বাড়ি থেকে কিশোরগঞ্জের একটি বাসে উঠেছিলাম। সালনা এলাকা পাড় হতেই আমার কাছে অন্য সময়ের তিনগুণ বেশি ভাড়া দাবি করা হয়। অতিরিক্ত ভাড়া না দেওয়ায় ও প্রতিবাদ করায় আমাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। কিছু অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়ার কথা বললেও তারা তা নিতে চাননি। পরে আমি রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নেমে গেছি।
গার্মেন্টস শ্রমিক আসাদুল সকালে আশুলিয়া থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তিনি বলেন, যানজট ও দুর্ভোগের শঙ্কা নিয়ে বাসা থেকে বের হলেও মহাসড়কে ঠিক তার ভিন্ন চিত্র দেখতে পাচ্ছি। একদমই যানজট নেই। অনেকটা মহা আনন্দেই স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি।
সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বিকেল নাগাদ দুর্ভোগ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকসহ সড়ক সংশ্লিষ্টরা। তবে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন।
তিনি জানান, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রায় মহাসড়ক থেকে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তিন শিফটে তিন শতাধিক পুলিশসহ অতিরিক্ত আরও ১০০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের সকল থানার পুলিশ সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন।
শিহাব খান/আরএআর