বাংলাবাজার ঘাটে উপচে পড়া ভিড়, তীব্র গরমে দুর্ভোগে যাত্রীরা
ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ঘাট হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা বাড়ি ফিরছে। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) ভোর থেকেই যাত্রীরা এ নৌরুটে এসে ভিড় করছে। এ সময় ঘাট এলাকায় উপচে পড়া ভিড় শুরু হলে প্রখর রোদে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে ঘাট এলাকায় দেখা ঘেছে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষ এ নৌরুট হয়ে বাড়ি ফিরছে। তাই যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। এদিকে দুপুরের প্রখর রোদ যেন মাড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোদের তাপ এড়াতে ভোর থেকে যাত্রা শুরু করলেও ঘাটে এসে বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা।
ভোর থেকে যাত্রীদের পাশাপাশি ফেরি পারাপারের জন্য শত শত যানবাহন ঘাটে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাত্রীর চাপ সামাল দিতে ২৪ ঘণ্টা ফেরি চলাচলের পাশাপাশি সচল রয়েছে সব নৌযান। এদিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে যাত্রীরা লঞ্চ ও স্পিডবোটে করেও ঘাটে এসেছে।
যাত্রীরা জানান, সকালে রোদের তাপ ও গরম কম থাকে। এ কারণে ভোরে তারা যাত্রা শুরু করেছেন। তবে ভিড় বেশি থাকায় পারাপার বিলম্ব হচ্ছে। লঞ্চ স্পিডবোট ও ফেরিতে উঠে অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেক সময়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের উত্তাপ বাড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে দ্বিগুণ।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, নৌরুটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় বেড়েই চলেছে। যাত্রীদের চাপ নিয়ন্ত্রণে ঘাটে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলাচল করছে ৮৭টি লঞ্চ, ১১৫টি স্পিডবোটসহ ১০টি ফেরি।
এদিকে ২৪ ঘণ্টা ফেরি সচল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আগামী ১৫ মে পর্যন্ত ভোর সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত লঞ্চ সার্ভিস চালু থাকছে। স্পিডবোট ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু থাকছে। তবে দুর্ভোগ কমাতে ফেরির সংখ্যা আরও বাড়ানোর পাশাপাশি ঘাটে শৃঙ্খলার দাবি করেছেন যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে আসা যাত্রী রবিন বলেন, ভোরে গরম কম থাকবে। তাই রওনা দিয়েছি। লঞ্চে গাদাগাদি করে মানুষ পার হচ্ছে। রোদের তাপ বেশি হওয়ার এখন কষ্ট হচ্ছে।
ঘরমুখী যাত্রী আসমা বেগম বলেন, সকাল সকাল বের হয়েছিলাম ভিড় কম হবে ভেবে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি উল্টো চিত্র ঘাটে। হাজার হাজার মানুষ রয়েছে পারাপারের জন্য। রোদে বাচ্চাদের নিয়ে ঘাটে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, লঞ্চ-স্পিডবোটে বেশি সংখ্যক যাত্রী পার হচ্ছে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে কি না, তা আমারা লক্ষ করছি। ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় বেশি রয়েছে। যাত্রীর চাপ থাকায় রাত ১০টা পর্যন্ত লঞ্চ চালু থাকবে। যানবাহন পারাপারের জন্য কম সংখ্যক ফেরি থাকায় ঘাটে যানবাহন পারাপারে বিলম্ব হচ্ছে।
বাংলাবাজার ঘাটে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আসিব বলেন, ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে ঘাট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, নৌরুটে সকাল থেকে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। ছয়টি ফেরি বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ২৪ ঘণ্টাই চলবে। সব নৌযান নির্বিঘ্নে চলাচল করায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা সহনীয় থাকবে বলে মনে হচ্ছে। ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় আজ বেশি।
নাজমুল মোড়ল/এনএ