শেরপুরে শিলাবৃষ্টিতে ৫শ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত
শেরপুরে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ৫শ হেক্টর জমির ফসল ও বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) ভোররাতে জেলা সদরসহ ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় এই ঝড়। এ ছাড়া বোরো, শাক-সবজি ও গাছপালারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রীবরদী উপজেলার মাটিয়াকুড়া, গিলাগাছা, কুরুয়া, ধাতুয়া, শেখদি ও কুড়িকাহনিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।
সরেজমিনে জেলা সদরের কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, শিলাবৃষ্টির আঘাতে ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। অন্যদিকে নিচু এলাকায় পানি জমে ডুবে গেছে বিভিন্ন সবজির আবাদ।
চরমোচারিয়া ইউনিয়নের মুন্সীরচর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রহমত আলী জানান, করোনার কারণে এমনিতেই কয়েকবছর ধরে ধান-আবাদে লোকসান দিতাছি। এদিকে আজ ভোর রাইতে শিলাবৃষ্টিতে ধান ক্ষেতের যে ক্ষতি হইছে তা পূরণ সম্ভব না।
সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কৃষক আজগর আলী বলেন, ধার-দেনা কইরা জমিটুকুতে ধান লাগাইছি। গত কয়েকবছর করোনার কারণে অতটা লাভ করবার পারি নাই। এইবার ভাবছিলাম কয়ডা টেহ্যা বেশি দামে বেঁচমু। কিন্তু ক্ষেতের সব ধানগাছ শিলে নষ্ট হয়ে গেছে।
শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের কৃষক মফিল উদ্দিন বলেন, চার একর জমিতে বোরো আবাদ করেছিলাম। এক রাইতেই সব শেষ হইয়া গেল।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোররাতের শিলাবৃষ্টিতে শেরপুরে বোরো আবাদের ক্ষতি হয়েছে। জেলায় প্রায় পাঁচশ হেক্টর জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে ইতোমধ্যে স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া দূর্যোগ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের ডিজির সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা হাতে পেলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারব।
জাহিদুল খান সৌরভ/আরআই