পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশ তদন্ত করবে। এ বিষয়ে দেশবাসীর নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাই বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন। তবেই সঠিক তথ্য উঠে আসবে এবং প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর কাজিচওড়া গ্রামে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া রবিউল ইসলামের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা আমাকে ব্যথিত করেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ জনগণের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান করা। অথচ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছেন কয়েকজন। দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে এটা করা ঠিক হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ ছিল। তাহলে সাধারণ মানুষ বিচারের দাবিতে সড়কে নামত না। ন্যায়বিচার পাওয়া মানুষের নাগরিক অধিকার।
তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু শুধু নিহতের পরিবারের নয়, সারাদেশের জন্য এটি অশুভ সংকেত। নিহতের বিধবা স্ত্রীকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দিতে হবে। স্থানীয় অনেক দপ্তরে শূন্যপদ রয়েছে। সেখানে তাকে চাকরির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এ পরিবারকে সহায়তা করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। নিহত রবিউলের একমাত্র মেয়ের (৮ মাস) ভরণপোষণের জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা হারে প্রদান করা হবে। এছাড়াও এ পরিবারকে আমার সাধ্যমত আমি সহায়তা করে যাব।
জিএম কাদের বলেন, আবেগের কারণে সড়ক অবরোধসহ অনেক কর্মসূচি পালন করেছে গ্রামবাসী। এ ঘটনায় যেন অজ্ঞাত মামলায় কেউ হয়রানি না হয়- বিষয়টি পুলিশকে খেয়াল রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
এর আগে জিএম কাদের লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের হেফাজতে মারা যাওয়া রবিউল ইসলাম খানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। এরপর নিহতের কবর জিয়ারত করে চলে যান জিএম কাদের।
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে বৈশাখী মেলায় জুয়া খেলা সন্দেহে পোশাকশ্রমিক রবিউল ইসলামকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হলে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রবিউলের মৃত্যু হয়। কিন্তু পরিবারের দাবি পুলিশের নির্যাতনে রবিউলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে টানা দুই দিন মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। ফলে অভিযুক্ত সদর থানার এসআই হালিমকে শুক্রবার দুপুরের দিকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আতিকুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মামলা করা হয়নি। তবে সদর থানা পুলিশ এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরএআর