রঙিন ফুলকপি চাষে কৃষক সন্তোষের চমক
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস। তিনি সারা বছরই তার জমিতে নানা ধরনের শাকসবজির আবাদ করে থাকেন। তবে এবার তিনি স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে রঙিন ফুলকপি চাষ করে চমক দেখিয়েছেন।
সন্তোষ বিশ্বাস তার অল্প জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার প্রয়োগ করে বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন। তার এমন সফলতা দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অন্যান্য কৃষকও।
এদিকে রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে কৃষক সন্তোষ বিশ্বাসের জমিতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয় কৃষকসহ উৎসুক জনতা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ বিশ্বাস। তিনি সারা বছরই নানা রকম শাক-সবজির আবাদ করেন। এ বছর তিনি কৃষি অফিসের পরামর্শে ২৫ শতক জমিতে লাউ, ঢেঁড়স, টমেটো ও শসার পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ২০০ রঙিন ফুলকপির বীজ বপন করেন। এতে তিনি শুধু জৈবসার ব্যবহার করছেন।
কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, এবারই প্রথম কৃষি অফিস থেকে ২০০ রঙিন ফুলকপির বীজ এনে রোপণ করি। তারপর ঠিকমতো পরিচর্যা করেছি এবং জৈব সার প্রয়োগ করেছি। তেমন কোনো খরচও হয়নি। অল্প পরিশ্রম ও খরচে বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপির ফলন ভালো হয়েছে। রঙিন ফুলকপিগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। বাজারে এসব ফুলকপির চাহিদা ও মূল্যও বেশি। এরই মধ্যে ২০ হাজার টাকার রঙিন ফুলকপি বিক্রি করেছি।
তিনি আরও বলেন, মজার ব্যাপার হলো রঙিন এসব ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই এলাকার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ আমার জমিতে ভিড় করছেন। অনেকেই এ জাতীয় ফুলকপি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এবং আমার কাছে পরামর্শ চাইছেন।
একই এলাকার কৃষক লতিফুর রহমান জানান, আমাদের এলাকায় সন্তোষ বিশ্বাসের আগে অন্য কেউ রঙিন ফুলকপির চাষ করেনি। আমিও ফুলকপিগুলো দেখেছি। খুব ভালো ফলন হয়েছে। এতে খরচ কম এবং বাজারে চাহিদা ও দাম বেশি। আগামীতে আমিও আমার জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করব।
বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস শাকসবজি চাষে খুবই আগ্রহী। তিনি প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল ও লাভবান হয়েছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় অনেক কৃষকই এখন রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আমরা কৃষকদের পাশে সব সময় আছি।
তিনি আরও বলেন, ফুলকপি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। বিশেষ করে ফুলকপিতে ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে। এটি ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজ করে।
জিয়াউর রহমান/এসপি