নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ
রাত পোহালেই মহান স্বাধীনতা দিবস। দিনটি উপলক্ষে লাল সবুজ আর বাহারি ফুলে বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। বর্ণিল আলোকসজ্জায় স্পষ্ট স্বাধীনতা, আর সৌধ প্রাঙ্গণের বাতাসে যেন বইছে স্বাধীনতার ঘ্রাণ। শ্রদ্ধা গ্রহণে যেন বুক পেতে আছে জাতীর সূর্য সন্তানরা।
৩০ লাখ শহীদের স্মৃতি ধারন করে আছে ১০৮ একর জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সাভারের এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ। বাঙালি মায়ের ৩০ লাখ সূর্য সন্তানের স্মৃতিবিজড়িত সৌধ এটি। রাত পোহালেই দিনের প্রথম প্রহরে যেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। পরে সকল স্তরের মানুষ শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) জাতীয় সৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শেষ হয়েছে লাল সবুজ আর বাহারি ফুলে ফুলে স্মৃতিসৌধ সাজানোর কাজ। ধুয়ে মুছে পরিপাটি করা হয়েছে পুরো সৌধ প্রাঙ্গণ। নিরাপত্তার জন্য লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। চলছে তিন বাহিনীর মহড়া ও বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। দিবসটির প্রায় ১ মাস আগে থেকেই সর্বসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। শেষ হয়েছে আলোকসজ্জার কাজ।
পরিচ্ছন্ন কর্মী রঙমালা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধে কাজ করে দেশের জন্য জীবন দেওয়া সন্তানদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের জন্য কাজ করতে পেরে গর্বে বুকটা ভরে যায়। আমি টাকার জন্য কাজ করি না। স্মৃতিসৌধের প্রতি একটা মায়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাকি জীবনটা এখানেই কাটিয়ে দিতে চাই।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রং তুলির কাজ করেন আব্দুল জলিল। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নিয়মিত স্মৃতিসৌধে রংতুলির কাজ করি। আমি আমার তুলির আঁচড়ে শহীদদের স্মরণে সৌধ প্রাঙ্গণের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। মাসব্যাপী আমরা চেষ্টা করি যাতে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সকলের কাছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ উপস্থাপন হয় শহীদদের চিহ্ন হিসেবে।
সাভার-২, গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আল আহসান আতিক বলেন, আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর মন্ত্রী, সচিব, কূটনীতিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারপর স্মৃতিসৌধ জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত হবে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, স্বাধীনতা দিবস ঘিরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা স্মৃতিসৌধের পার্শবর্তী এলাকার সকল নাগরিকদের তথ্য নিয়েছি। আমরা সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।
মাহিদ মাহিদ/আরআই