ইউক্রেন থেকে ফিরলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত ছিল হাদিসুরের
ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান (৩৩) নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহতের চাচা বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার চাচাত ভাই মাদরাসাশিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে হাদিসুর। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে লেখাপড়া করে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন তিনি।
বুধবার (২ মার্চ) রাত ১০টার পর ইউক্রেন থেকে ওই জাহাজে থাকা নাবিকরা হাদিসুর রহমানের বাড়িতে ফোন করে তার নিহতের খবর জানায়।
উপজেলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিহত হাদিসুর রহমানের বয়স ৩৩। পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এবার বাড়ি ফিরলে তাকে বিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। আমরা এখন দুশ্চিন্তায় আছি হাদিসুরের মরদেহ দেশে কীভাবে আনব। যুদ্ধের কারণে যেখান থেকে জাহাজই বের হতে পারছে না, সেখানে হাদিসুরের মরদেহ নিয়ে আসাটা আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে যাব, মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে সহযোগীতা চাইব।
হাদিসুর রহমানের মৃত্যুর খবর আসার পর পুরো এলাকায় শোক নেমে এসেছে- জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই বিচলিত ছিলাম। কারণ, হাদিসুর পাঁচ দিন আগে তার মাকে মোবাইলে জানিয়েছিল, যুদ্ধে আটকা পড়েছে। ফিরে আসতে পারবে কি না, তা নিয়ে সেও সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হলো। হাদিসুর আমাদের ছেড়ে চলে গেল।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ইউক্রেনের বন্দরে থাকা পণ্যবাহী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলা চালানো হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। বাকি ২৮ জন নিরাপদে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএইচএস