চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের অনুরোধ
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান ড. মো. হারুনর রশিদ স্বাক্ষরিত একটি একটি পত্রে এ অনুরোধ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়েছে, চাঁদপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদী থেকে গত কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ডুবোচর খননের নামে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এ কাজটি দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছে। এর ফলে ইলিশের বৃহত্তম বিচরণক্ষেত্র ও অভয়াশ্রম (ষাটনল হতে চর আলেকভাণ্ডার) নষ্টসহ নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে- মেঘনা নদীতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুরের অংশে ইলিশের প্রজনন ও বিচরণ সাম্প্রতিক সময়ে মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে শতশত ডেজারের প্রপেলারের আঘাত, নির্গত পোড়া মবিল ও তেলের কারণে মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাদ্য নদীর প্লাংকটন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এছাড়া বালু উত্তোলনে নদী দূষণসহ নদীগর্ভের গঠন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়ার ফলে বাসস্থানের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের এ ধরনের পরিবর্তনের ফলে তাদের আবাসস্থল যেমন ধবংস হচ্ছে, তেমনি ইলিশসহ অন্যান্য মাছের খাদ্যের উৎস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে মাছের বিচরণ ও প্রজনন প্রক্রিয়া পাল্টে যাওয়াসহ ইলিশের উৎপাদন মেঘনা নদীতে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষা এবং এর আবাসস্থল নিরাপদ করতে প্রধান প্রজনন ও বিচরণ মৌসুমে মেঘনায় বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধসহ ড্রেজারসমূহ স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বিশেষ প্রয়োজন। এমতাবস্থায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে মেঘনা নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন ড. মো. হারুনর রশিদ।
বিজ্ঞাপন
এদিকে গতকাল বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, জাটকা রক্ষায় আগামী দুই মাস নদীতে ড্রেজার বন্ধ থাকবে। নদী সংলগ্ন যেসব খালগুলো রয়েছে, সেখানে প্রতিটি খালের প্রবেশমুখে বেড়া দিতে হবে। নদীতে ড্রেজারসহ ইঞ্জিনচালিত যেসব নৌকা রয়েছে, সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। আর এসব বাস্তবায়নে দায়িত্বে থাকবেন ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
শরীফুল ইসলাম/আরএআর