পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অবরুদ্ধ
নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভা বাতিল ঘোষণা করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় উপাচার্যের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম ঢাকা পোস্টকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পূর্বনির্ধারিত রিজেন্ট বোর্ডের সভা বেলা ১১টায় উপাচার্যের কক্ষে শুরু হয়। সভায় শতাধিক নিয়োগ, আপগ্রেডেশন ও শিক্ষকদের এমফিল পিএইচডি অনুমোদনের কথা ছিল। উপাচার্য নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি। তিনি তার ভাতিজিসহ ১০২টি পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
দুপুরে সভা চলাকালে বিতর্কিত নিয়োগ ও অনিয়ম নিয়ে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যরা প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এ সময় উপাচার্য রোস্তম আলী উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে সভা বাতিল ঘোষণা করেন তিনি।
অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম অভিযোগ করে বলেন, নিজের ভাতিজি কানিজ ফাতিমাকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়াসহ অস্বচ্ছতা ও যোগসাজশ করে ১০২ জনকে গণনিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করে আসছিলেন উপাচার্য। তার মেয়াদ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। তিনি মেয়াদকালের শেষ পর্যায়ে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। নিজের খেয়াল-খুশি মতো অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অযোগ্য, অদক্ষ্য জনবল নিয়োগ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। রিজেন্ট বোর্ডের সভা শেষে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে
শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন, বিদেশ গমন, পিএইচডি, এমফিলসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রাখা হবে।
পাবনা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) রওশন ইয়াজদানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পাওয়ার পার আমরা সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে ১০১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে এককভাবে প্রতীকী অনশন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে ইউজিসি ও তদন্ত কমিটি। অজ্ঞাত কারণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির পরও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
রাকিব হাসনাত/এনএ/আরএআর