কেন বন্ধ হচ্ছে না ঢাবির ‘গেস্টরুম নির্যাতন’?
জাহিদুল ইসলাম (ছদ্মনাম), পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তৃতীয় বর্ষে। প্রথম বর্ষে বেশ কয়েকবার সূর্যসেন হলের গেস্টরুমে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্রলীগের নির্যাতনের হুমকি ও ভয়ে ছেড়েছেন হল। শুধু জাহিদ একা নন, গেস্টরুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তার মতো অনেক শিক্ষার্থী ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুমে নির্যাতনের অভিযোগ বেশ পুরোনো। কেন এমন অভিযোগ— বিষয়টির গভীরে যেতে চেয়েছে ঢাকা পোস্ট। জানার চেষ্টা করেছে মূলত কী হয় গেস্টরুমে। কথা বলেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শুধু অভিযোগকারী নন; অভিযুক্ত এবং দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রশাসন— সবার কথাই তুলে আনার চেষ্টা করেছে।
সম্প্রতি বিজয় একাত্তর হলের গেস্টরুমে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। শেষপর্যন্ত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন।
শুধু একাত্তর হলের ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ নয়; করোনায় দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর গত বছরের ৫ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল খুলে দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত (২৮ জানুয়ারি) অন্তত সাতটি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মাত্র একটিতে দোষীসাব্যস্ত হয়ে সিফাত উল্লাহ সিফাত নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গেস্টরুম নির্যাতনের নেতৃত্বে থাকেন হল ছাত্রলীগের নেতা ও তাদের অনুসারীরা। হলের শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মিছিল-মিটিং এমনকি ছাত্রলীগ নেতাদের প্রটোকলে ব্যবহার করা হয়। তারা যাতে এসব কাজ এড়িয়ে না যেতে পারেন, সে কারণে তাদের গেস্টরুম কালচারের মাধ্যমে দমিয়ে রাখা হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গেস্টরুম নির্যাতনের নেতৃত্বে থাকেন হল ছাত্রলীগের নেতা ও তাদের অনুসারীরা। হলের শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মিছিল-মিটিং এমনকি ছাত্রলীগ নেতাদের প্রটোকলে ব্যবহার করা হয়। তারা যাতে এসব কাজ এড়িয়ে না যেতে পারেন, সে কারণে তাদের গেস্টরুম কালচারের মাধ্যমে দমিয়ে রাখা হয়।
তবে ছাত্রলীগ বলছে, গেস্টরুমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, নেত্রীকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হয় এবং নবীন শিক্ষার্থীদের ‘গাইডলাইন’ দেওয়া হয়। তবে মাঝে মাঝে এর ব্যত্যয় ঘটে।
অন্যদিকে প্রশাসনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে। তাদের এমন দাবির সঙ্গে একমত নন ঢাবির অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের। তাদের দাবি, গেস্টরুম নির্যাতনের সঙ্গে ছাত্রলীগই সম্পৃক্ত। এটি চলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রশ্রয়ে!
‘গেস্টরুম’ বলতে মূলত হলের অতিথি কক্ষকে বোঝানো হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের আত্মীয়স্বজন ও দর্শনার্থীদের বসতে দেওয়া হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে গেস্টরুমের সংজ্ঞাটাই যেন পাল্টে গেছে। শিক্ষার্থীদের কাছে গেস্টরুম এখন আতঙ্কের নাম!
গেস্টরুমে প্রতি রাতেই হলের নবীন শিক্ষার্থীদের হাজিরা দিতে হয়। প্রতিদিনের বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় থাকে- কে গেস্টরুমে আসেনি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনি। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। সঙ্গে চলে অশ্লীল গালিগালাজ। অনেকে এসব সইতে না পেরে হল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গেস্টরুমে প্রতি রাতেই হলের নবীন শিক্ষার্থীদের হাজিরা দিতে হয়। প্রতিদিনের বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় থাকে- কে গেস্টরুমে আসেনি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনি। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। সঙ্গে চলে অশ্লীল গালিগালাজ। অনেকে এসব সইতে না পেরে হল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর গেস্টরুম সংস্কৃতি কেমন— সরেজমিনে তা দেখতে ঢাকা পোস্টের এ প্রতিবেদক ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন হলে। তার বর্ণনায়, রাত ১০টার দিকে গেস্টরুমে শুরু হয় হাজিরা দেওয়ার প্রক্রিয়া। নানা যজ্ঞে তা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রতিটি হলে কয়েকটি গ্রুপ নিয়ম করে গেস্টরুম নিয়ন্ত্রণ করে। তারা সবাই ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য।
গেস্টরুমে নির্যাতনের শিকার কোনো শিক্ষার্থী সরাসরি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তাদের ভয়, নাম-পরিচয় প্রকাশ পেলে ক্যাম্পাসে থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে কিংবা ফের নির্যাতনের শিকার হতে হবে। তবে, পরিচয় গোপন করে সাধারণ অনেক শিক্ষার্থী এ বিষয়ে কথা বলেন।
ছেলেদের হলে যেমন হয় গেস্টরুম
বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, হলের গেস্টরুমে একসঙ্গে ২০ থেকে ৪০ শিক্ষার্থীকে ডেকে নেওয়া হয়। ছাত্রলীগের বড় ভাইরা সোফায় বসে থাকেন। তাদের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আর তারা যা বলবেন, তাতে সায় দিয়ে ‘জ্বী ভাই, জ্বী ভাই’ বলতে হয়। কেউ বিরোধিতা করলে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অকথ্য ভাষায় গালাগাল তো রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমেই শিবির ব্লেম দিয়ে ভয় দেখানো হয়। গেস্টরুমে বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকতে হয়। উপস্থিত না থাকলে হল থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
মেয়েদের হলে গেস্টরুম যেমন হয়
আবাসিক হলের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছেলেদের হলের তুলনায় ‘গেস্টরুম কালচার’ মেয়েদের হলে কম। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের মাধ্যমে হলে ওঠেন, তাদের বাধ্যতামূলক কর্মসূচিতে থাকতে হয়। পাশাপাশি নেত্রী-ভাইয়াদের প্রটোকল দিতে হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে ডাকা হয় গেস্টরুমে। সেখানে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে জোরপূর্বক নাচতে কিংবা কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয়। এসব সহ্য করতে না পেরে অনেকে হল ছেড়ে দেন।
গত বছরের ১৭ নভেম্বর রোকেয়া হলের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে হলের তৃতীয় বর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এক ছাত্রীকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নাচতে বাধ্য করা হয়!
শামসুন নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তানিয়া খানম (ছদ্মনাম) ঢাকা পোস্টকে বলেন, হলে যারা প্রশাসনিকভাবে ওঠেন তাদের সমস্যা হয় না। তবে যারা রাজনৈতিকভাবে ওঠেন তাদের বাধ্যতামূলক বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে হয়। নেত্রীদের নির্দেশনা মানতে হয়। না মানলে গেস্টরুমে ডাকা হয় এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। কেউ কেউ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়েন এবং হল ছেড়ে দেন।
তবে ছেলেদের হলের তুলনায় এখানে নির্যাতন অনেকটা কম— উল্লেখ করে ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, যারা বেশি অসহায়, বিশেষ করে প্রথম দিন থেকেই যাদের হলে ওঠা প্রয়োজন; মূলত তারাই গেস্টরুম কালচারের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি প্রথম দিন থেকে সবাইকে সিট দিতে পারত তাহলে এ সমস্যা হতো না।
গেস্টরুম কালচার বন্ধের দাবি
হলে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা। সংগঠনের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবরার হত্যা মামলার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করলে একটি নজির তৈরি হবে। হলে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে এমন নজির জরুরি। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলের গেস্টরুমে যে নির্যাতনের ধারা তৈরি হয়েছে, তা থামাতে আমরা নির্যাতনবিরোধী আইন চাই।
একই সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, বিভিন্ন সময় গণরুম-গেস্টরুমে নির্যাতন হলেও প্রশাসন কখনও বিচার করে না। তাই নির্যাতনও বন্ধ হয় না। নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সদিচ্ছা জরুরি।
‘আবরার হত্যার পর বুয়েটে আইন করে গেস্টরুম কালচার বন্ধ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও আইন করে গণরুম-গেস্টরুম নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি’— বলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের এ নেতা।
দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, আমরা সবাই যোগ্যতা ও ম্যানার শিখেই এখানে এসেছি। হলগুলোতে ম্যানার শিখানোর নামে আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘গেস্টরুম কালচার’ পুরোপুরি বন্ধ হোক।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্রলীগ দখলদারিত্বের অংশ হিসেবে হলগুলোতে গেস্টরুম নির্যাতন চালায়। আমরা এসব টর্চার সেল সম্পূর্ণ উচ্ছেদ চাচ্ছি। এমন কালচার থাকাই উচিত নয়।
অভিযোগের তির প্রশাসনের দিকে
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি। বিষয়টি এমন, ছাত্রলীগ হচ্ছে বাসের ড্রাইভার; আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হচ্ছে হেলপার। অন্য সব ছাত্র সংগঠনের একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত। ডাকসু যদি চলমান থাকে তাহলে এমন অপতৎপরতা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যাবে।
ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান বলেন, হলগুলোতে যে নির্যাতন ও দখলদারিত্বের ঘটনা ঘটছে, এর জন্য ছাত্রলীগের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা বেশি দায়ী। কারণ, তারাই ছাত্রলীগকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বারবার। তাদের (ছাত্রলীগ) এ অপসংস্কৃতির ইন্ধনদাতা হলো মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন।
কী বলছে ছাত্রলীগ?
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর জন্য আমাদের যে নির্দেশনা দেওয়া আছে সেটা হলো- কর্মীদের সঙ্গে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের যোগাযোগ রক্ষা করা। যোগাযোগের উপায় হচ্ছে, তারা আড্ডা দেবে; বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, নেত্রীকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা তো নবীন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, বাস্তবতা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারেন না। তাদের যাতে সঠিক গাইডলাইন দেওয়া যায় এবং কোনো সমস্যা বা সংকটে পড়লে তাদের পাশে যেন আমরা থাকতে পারি, তা নিশ্চিতে আমরা তাদের নির্দেশনা দিই।
তাহলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে গেস্টরুম নির্যাতনের অভিযোগ কেন— এমন প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে গণরুম সংস্কৃতির প্রসঙ্গ টেনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, গণরুমের সংস্কৃতির কারণেই মূলত ছাত্র রাজনীতিতে নবীন শিক্ষার্থীদের হাতেখড়ি হয়। অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
হলের পরিবেশই গেস্টরুম নির্যাতনের জন্য দায়ী
হলের পরিবেশই গেস্টরুম কালচারের জন্য দায়ী— এমনটি মনে করেন ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ওয়ারা। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন শিক্ষার্থী যখন যথাযথ পরিবেশ পায় না, তখন তার ব্যবহার ও আচরণে রুক্ষ ভাব প্রকাশ পায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মনে করে এ নিয়ে কথা বলব, আইন করব, শাস্তি হবে— হতেই পারে। তবে এসব সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নয়। আমাদের অবশ্যই হলের জীবনযাত্রার মান এবং শিক্ষার্থীদের যেসব সমস্যা আছে সেগুলোর সমাধান করতে হবে। এসব করতে পারলে স্বাভাবিকভাবে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
যা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
গেস্টরুম নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর কাছে। তার দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসে কোনো ভীতি নেই, শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো অস্থিরতা নেই। তারপরও নির্যাতনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে হল প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তাদের লজিস্টিক সাপোর্টও দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের ‘আইন করে গণরুম-গেস্টরুম নিষিদ্ধের দাবি’ প্রসঙ্গে প্রক্টর গোলাম রব্বানীর মন্তব্য, ‘শিক্ষার্থীদের পরামর্শটি খুবই ভালো। শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে, নিজেদের অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত রাখতে শিক্ষার্থীরা সঠিক পরামর্শ দেবে— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমনটি প্রত্যাশা করে। আমরা যেকোনো ভালো পরামর্শ স্বাগত জানাব। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গেস্টরুম কালচার বন্ধে হল প্রশাসন বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’ গেস্টরুম কালচারসহ যেকোনো ধরনের অভিযোগ হল প্রশাসনকে সরাসরি জানানোরও পরামর্শ দেন তিনি।
এইচআর/আরএইচ/এমএআর/