শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সংহতি
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংহতি সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রচার সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন- সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা লিপি, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অনিক রায়, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ রায়, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা প্রমুখ।
সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ছাত্রদের দাবি ছিল খাবারের মান বৃদ্ধি করা, ইন্টারনেট সুবিধা বৃদ্ধি করা। এটা শিক্ষার্থীদের দাবি না, এটা আপনাদের দায় হওয়া উচিত ছিল। আপনারা আজ সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে অনলাইন ক্লাসের কথা বলছেন অথচ শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটের মান বাড়াননি। যখনই ছাত্রদের আন্দোলন হয়েছে, আপনারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনা ভাইরাস শুধু আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থাকে, অন্য কোথাও থাকে না? আপনারা চান না অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্ররা আওয়াজ তুলুক।
শাবিপ্রবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো উপাচার্য তার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিতে পারেন না। সামান্য লজ্জা থাকলেও আপনি পদত্যাগ করতেন, আপনার লজ্জাবোধ নেই। আপনি দয়া করে পদ ছেড়ে দিন। এই পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, শাবিপ্রবি উপাচার্য নিজেকে উপাচার্য মনে করেন না, নিজেকে জমিদার মনে করেন। জমিদারদের সাত খুন মাফ। তিনি তো শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, খুন তো আর করেন নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগুলো ক্ষমতার ওপর পুতুলের মতো টিকে আছে। শিক্ষার্থীরা ফুল দিতেও পারে, কাটাও দিতে পারেন। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। এই উপাচার্য পদত্যাগ করলেও প্রতিবাদ করতে হবে। কারণ আপনাদের এই সংগ্রাম চলমান থাকবে এই বিশ্বাস আমার থাকবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা লিপি বলেন, আমি আজ সারা দেশের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে, সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। তোমরা আন্দোলনে পিছু হটবে না, আমরা আছি তোমাদের সঙ্গে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আপনি পদত্যাগ করলে আপনার সম্মান থাকবে, সম্মান নিয়ে পদত্যাগ করুন। আপনি যত চেয়ার আঁকড়ে থাকবেন তত আপনার সম্মান হানি হবে। আমরা আশা করি আপনার মধ্যে সে সম্মানবোধ জাগ্রত হবে।
তিনি বলেন, তার (অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন) এই অবস্থা দেখে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও বার্তা নেবেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের পৃষ্ঠপোষকতা করা, দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করার যে নীতি এবং রীতি চলছে, সরকারকে এই রীতি এবং নীতি থেকে সরে আসার দাবিও এই সমাবেশ থেকে জানাচ্ছি।
এইচআর/আইএসএইচ