বৈঠকে রাবি প্রশাসন, খোলা রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী দুই সপ্তাহ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে বৈঠকে বসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় বৈঠক শুরু হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রেখে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রাখার দাবিতে প্রশাসন ভবনের বাইরে শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রেখে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা তো কথায় কথায় ইউরোপকে আইডল মানি। ইউরোপের মানুষকেও তো মাস্ক পরানো যাচ্ছে না। এখানেও মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর উপায় বের করতে হবে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমাদেরও নিতে হবে?
এ সময় শাহাজাহাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরন অনশনের প্রতি সংহতি জানান শিক্ষার্থীরা।
পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ আমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রশাসন আর ছাত্রসংগঠন আমরা সবাই মিলে করোনা মোকাবিলা করতে পারব। অনলাইনের নাটক কইরেন না। আমাদের দেশে সে ব্যবস্থা এখনো নাই। একটা দেশ নিয়ে কতো হাসাহাসি, সেই উগান্ডার চেয়েও পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। পূর্বে দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখার কথা বলে ৬০০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা এখানে পুনরায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।
রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আসলাম-উদ-দৌলা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত নীতিবোধ ও শিক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা তার প্রতিফলন ঘটাবে। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের অথর্ব করা যাবে না।
রাকিবুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে এমনও হয়েছে যে ২০১৯ সালের প্রথমবর্ষে ভর্তি হয়ে আজ ২০২২ সালেও প্রথমবর্ষেই থাকতে হচ্ছে।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, আমরা জানি ওমিক্রন এখনো রাজশাহীতে আসেনি। গতকালই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত দিলো অনলাইন বা অফলাইন যে কোনো উপায়ে ক্লাস চালানো যাবে। হঠাৎ এক রাতের মধ্যে কী এমন হয়ে গেল যে আবার জরুরি মিটিং দিতে হলো। যে মিটিং ডাকা হচ্ছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কেউ নাই। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়।
শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা ধ্বংসের সিদ্ধান্ত মানি না, মানবো না’, ‘সব কিছু স্বাভাবিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন?’, ‘শিক্ষা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হও’ ইত্যাদি সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
মেশকাত মিশু/আরএআর