বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে কী করতে?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, গত ৫০ বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্য চালিয়েছে। নৈরাজ্যের সঙ্গে তারা যুক্ত করেছে বাণিজ্যকে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ব্যয় ক্রমান্বয়ে আকাশচুম্বী হচ্ছে। এটি স্পষ্ট যে, শাসকগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
তিনি বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে জাতীয় গবেষণা ও নীতি প্রণয়নের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে কী করতে? আবরারের মতো প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের মেরে ফেলতে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন সরকারি দলের লোকদের চাকরি প্রদানকেন্দ্রে পরিণত হয়ে গেছে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশের অর্জনগুলোর মোহমুক্ত পর্যালোচনার কোনো পথ সরকার খোলা রাখেনি। আমাদের পর্যালোচনা কম, উচ্ছ্বাস বেশি। বর্তমানে সরকারের একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তার জয়গান গাওয়া, এবং বন্দনা ছাড়া ভিন্ন কোনো কথা বললে খড়গহস্ত হওয়া। অনেক লেখক, বুদ্ধিজীবী, কবি-সাহিত্যিক বিবেক বন্ধক দিয়ে সরকারের অন্ধ বন্দনায় মেতে আছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মন্ত্রী-এমপিরা কথায় কথায় বলেন, বাংলাদেশ নাকি ইউরোপ, আমেরিকার মতো উন্নত হয়ে যাচ্ছে, অথচ সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থার কথা সামনে আনতে চান না। যুক্তরাষ্ট্রে খুব কমসংখ্যক স্কুল বাদে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব স্কুল পাবলিক এডুকেশন সিস্টেমের অন্তর্গত। তাদের শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য বিনামূল্যে আলাদা বাস সার্ভিসও আছে, আর আমাদের সরকার হাফ ভাড়াও কার্যকর করতে নারাজ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল কাদেরী জয়। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স। সভায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মুক্তা বাড়ৈ, সদস্য সচিব শোভন রহমান।
এইচআর/আরএইচ