‘পদ’ চাইতে ঢাকায় এসে বেদম মার খেলেন ছাত্রলীগ নেতা
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে সম্মেলন নিয়ে কথা বলতে সিলেট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন সংগঠনের পদপ্রত্যাশী এক নেতা। তবে এসেই তিনি মারধরের শিকার হয়েছেন। মারধরে তার মাথা ফেটেছে। লেগেছে ১৩টি সেলাই৷
শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী ওই নেতার নাম আবদুল্লাহ আল মুন্না হাদী (২৫)। তিনি কানাইঘাট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি এবং প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিভিন্ন কমিটি দেওয়া নিয়ে তিনি সরব ভূমিকা পালন করে আসছেন।
আবদুল্লাহ আল মুন্না হাদীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী আমির হামজা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মারধরের পর ওই নেতা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্ন্যাকসের (ডাস) সামনে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী রুদ্রিক রাব্বী ও জগ্ননাথ হল ছাত্রলীগের কর্মী পলাশের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতার ওপর হামলা করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মারধরে আহত ওই নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাকে মারধর করার পর পকেটে থাকা পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা কেড়ে নেয় তারা। আমার মোবাইল ভেঙে ফেলে। দেশীয় অস্ত্রে তারা আমাকে আঘাত করতে থাকে। ‘তুই এখানে এসেছিস কেন? তোর এখানে কাজ কী? তোকে মেরে ফেলব’ ইত্যাদি বলে কিল ঘুষি মারতে থাকে আমির হামজা। শাহবাগ থানায় একটি মামলার আবেদন করেছি।
অভিযুক্ত আমির হামজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিষয়ে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে, ইমেজ ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টিএসসিতে ছিলাম। পরে জয় ভাইয়ের (ছাত্রলীগ সভাপতি) জন্মদিন উপলক্ষে কেক আনা ও অন্যান্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। একজন তৃণমূলের কর্মী আদর্শিক জায়গা থেকে সম্মেলন চাইতে পারেন, ঢাকায় এসে ছাত্রলীগ সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এটি তার অধিকার। তাই বলে কি গুন্ডা বাহিনী দিয়ে মারধর করতে হবে?
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগকে পকেট কমিটি বানিয়ে ফেলছেন। কারো যেন কথা বলার অধিকার নেই। শোভন-রাব্বানী থেকে কোনো শিক্ষা তারা নেননি বলেও উল্লেখ করেন ছাত্রলীগের এ নেতা।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মামলার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। বিষয়টি যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে, তাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি আমরা তদন্ত করব। এবং আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেব।
এইচআর/আরএইচ