অনলাইনে পরীক্ষা দিতে চান কুবির ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সশরীরে দু’ধাপে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেও স্থগিত করে দিতে হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে। এতে তৈরি হওয়া প্রায় দেড় বছরের সেশনজট লাঘব করতে অনলাইনে পরীক্ষাকেই বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের ফলে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১৩ জুন দু’দফায় সশরীরে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে।
কিন্তু করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’বারই পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। তখন থেকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
এমতাবস্থায় গত ১ জুন উপাচার্য অধ্যাপক ড এমরান কবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনেই পরীক্ষা হবে। উপাচার্যের এমন ঘোষণার পর ফেসবুকে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’ কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে রোববার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অংশ নেন ১ হাজার ৬৪৩ শিক্ষার্থী। যারমধ্যে অনলাইন পরীক্ষার পক্ষে ভোট দেন ৬৬ শতাংশ ব্যক্তি। বিপক্ষে ভোট দেন ৩৪ শতাংশ।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা বড় সেশনজটের মধ্যে আছি। আমরা আটকে থাকলেও আটকে নেই চাকরির বাজার। বরং তা আরও অস্থতিশীল হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষার বিষয়ে ভাবতে হবে।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী মানজুরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট থেকে মুক্তি করে দিচ্ছে। অথচ আমরা পিছিয়ে রয়েছি। শিক্ষার্থীদের চার বছরের অনার্স শেষ করতে সময় লাগে ছয় বছর। এই সেশনজট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
তবে নেটওয়ার্কজনিত সমস্যা, পর্যাপ্ত ডিভাইস না থাকাসহ বিভিন্ন অসুবিধার কারণে অনলাইনে পরীক্ষার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, এদেশে অনলাইন ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এছাড়া অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সবার প্রয়োজনীয় আধুনিক ডিভাইস নেই। সেসব বিবেচনা করে সশরীরেই পরীক্ষা দিতে চান তারা।
উপাচার্য ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এখনও কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে অনলাইন পরীক্ষা শুরু করেনি। যারা শুরু করেছে তাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সব এলাকায় ভালো নেটওর্য়াক নাই। সবাই পরীক্ষায় বসতে পারবে না। করোনা সংক্রামণ কিছুটা কমলে আমরা সশরীরে পরীক্ষার কথা ভাবছি। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনে পরীক্ষার বিষয়টি ভেবে দেখব।
এমএসআর