কুয়েটে হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাতভর অবস্থানের ঘোষণা

বন্ধ থাকা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা রোববার (১৩ এপ্রিল) রাত ৮টার মধ্যে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় শতাধিক শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন। রাতভর সেখানে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
রোববার রাত পৌনে ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সিএসসি ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান রাব্বি বলেন, দুপুর ২টা থেকে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি। প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন তুলে ধরেছিলাম, যেকোনোভাবে হোক আমাদের সকল আবাসিক হল খুলে দিতে হবে। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রশাসনের কাছ থেকে কোনোরকম পদক্ষেপ কিংবা ফিডব্যাক জানতে পারিনি, যেটি আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। আমরা ভেবেছিলাম শিক্ষক ও প্রশাসন শিক্ষাবান্ধব। কিন্তু শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ফিডব্যাক না পেয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরা রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোমবার সকালে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে। তবে আমরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাব না।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এরপর বিকেল ৪টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে রাত ৮টার মধ্যে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষকদের কাছে লিখিত আবেদন করেন তারা। কিন্তু কুয়েট কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করেনি। এ অবস্থায় রাতভর তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সকালে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, হল ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী হল থেকে বাইরে টিউশনি করেন। তারা টিউশনি করতে পারছেন না।
কুয়েটের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেটের সভা ছাড়া হল খোলা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাতেও ক্যাম্পাসের দুটি গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে, রাত ৮টার মধ্যে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী দুপুর আড়াইটার দিকে বন্ধ থাকা কুয়েটের প্রধান গেটের সামনে জড়ো হয়। কুয়েট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা বিকেল ৩টার দিকে আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করেন। এরপর তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান। সেখানে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের কাছে আসেন। শিক্ষকরা তাদেরকে বুঝিয়ে বলেন যে, সিন্ডিকেটের সভা ছাড়া অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও হলগুলো খোলা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। এ ঘটনার জেরে ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ