চারুকলায় নববর্ষের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

নববর্ষ মানেই উৎসব, রঙের বাহার ও সৃজনশীলতা। পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা ও প্রস্তুতির ব্যস্ততা। আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি হচ্ছে থিমভিত্তিক মুখোশ, আলপনা, ভিজ্যুয়াল উপস্থাপন ও ভাস্কর্য। এর মধ্যেই পুড়িয়ে ফেলা স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি পুনর্নির্মাণে শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৈশাখী আয়োজনের জন্য মূল মঞ্চ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মঞ্চ সাজানো হচ্ছে রঙিন বেলুন দিয়ে, পেছনের ব্যাকড্রপ তৈরি হচ্ছে পাটকাঠি দিয়ে। চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে রঙ, নকশা ও সৃজনশীল ভাবনার ছোঁয়া।
আনন্দ শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে এবারও অংশ নিচ্ছে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে আনা ১৮টি ঘোড়া। শিশুদের জন্য থাকছে নাগরদোলা, মিনি ট্রেন, খেলনা ও জাম্পিং-এর মতো বিনোদনের আয়োজন।
আরও পড়ুন
এবারের শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। সম্প্রতি এই প্রতিকৃতি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। কাঠামো নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে ককশীটের মতো হালকা ও সহজে রূপদানযোগ্য উপকরণ। ইতোমধ্যে প্রতিকৃতির দৃশ্যমান অংশ তৈরি শেষ হয়েছে।
শুধু ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ নয়, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ১৫ ফুট উচ্চতার এক পানির বোতল, যা মীর মুগ্ধের আলোচিত পানি লাগবে থিমের রূপায়ন। এই বোতলের ভেতরে থাকবে একাধিক খালি বোতল, যা শহিদদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
এছাড়া, বড় আকৃতির ইলিশ মাছ, কাঠের বাঘ, শান্তির পায়রা, ঘোড়া, পালকি, সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, রঙিন চরকি, পটচিত্রসহ নানা ভাস্কর্যও থাকবে। ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে শোভাযাত্রায় রাখা হয়েছে তরমুজের ফালি মোটিফ। আয়োজকরা জানান, তরমুজ ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক’, কারণ এর রঙ ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের প্রতিফলন।
চারুকলা অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিল্পী দীপক রঞ্জন সরকার বলেন, নাশকতার কারণে কিছু কাজ বিলম্বিত হলেও আমরা দ্রুততার সঙ্গে পুনর্গঠন করছি। ‘মাছ’, ‘বাঘ’, ‘তরমুজের ফালি’, ‘পালকি’ এবং ‘মুগ্ধের পানির বোতল’ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। পুড়ে যাওয়া ‘৩৬ শে জুলাই’ ও ‘শান্তির পাখি কবুতর’ মোটিফও পুনরায় তৈরি করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি সুন্দরভানে শোভাযাত্রা সম্পন্ন করার জন্য। শিল্পীরা তাদের সুনিপুণ হাতে কাজ করে যাচ্ছেন। স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করবো সর্বস্তরের মানুষ রি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি শোভাযাত্রাটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য। শিল্পীরা তাদের সুনিপুণ হাতে কাজ করে যাচ্ছেন। স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করবো সর্বস্তরের মানুষ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন।
কেএইচ/এমএসএ