আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বেগম রোকেয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগকে ফেরানো মানে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘আমার সোনার বাংলায় আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই, আওয়ামী লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ, খুনীদের আস্তানা, এই বাংলায় হবে না’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, আবারো ২৪ এর গণহত্যার বিচার হওয়ার আগে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। ছাত্রজনতা তা কখনো মেনে নেবে না। গত ৫ আগস্ট সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন ২৪ এর আন্দোলনের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। আমরা তার প্রতিফলন দেখছি না। তাদের বিচারের আগে বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। তাদের ফেরানোর যে কোনো অপচেষ্টাকে ছাত্র-জনতা রুখে দেবে।
শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, যারা ছাত্রজনতার ওপর গুলি চালিয়েছে তাদের যদি ফেরানোর চেষ্টা করা হয় আমরা তা বরদাস্ত করবো না। ছাত্রসমাজ প্রস্তুত আছে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার। যেহেতু আওয়ামী লীগ দল হিসেবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেহেতু তাদের হত্যার দায় স্বীকার করতে হবে এবং তাদের পরিপূর্ণ বিচার হতে হবে। বিচার হওয়ার আগে বাংলাদেশে তাদের ফেরানোর কোনো সুযোগ নেই।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থী জাকের হোসেন পাশা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ২৪ এর বিপ্লবের শক্তিকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য পেছন থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ফ্যাসিজমকে আবারো পুনর্বাসন করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা ছাত্রজনতা কখনো মেনে নেবে না। অতিদ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, কোনো কুচক্রী মহল যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে আমরা এক বিন্দু ছাড় দেব না। আমরা ছাত্রজনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। আমরা রাজপথ ছাড়ি নাই।
প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে একটি পোস্ট দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাতে তিনি লেখেন, আজকেও একটি চাপকে অস্বীকার করে আমি আবারও আপনাদের ওপরেই ভরসা রাখতে চাই। এ পোস্ট দেয়ার পর আমার কী হবে, আমি জানি না। নানামুখী প্রেশারে আমাকে হয়তো পড়তে হবে, হয়তো বিপদেও পড়তে হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও লেখেন, কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। আমিসহ আরও দুজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ মার্চ দুপুর আড়াইটায়। আমাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়, আসন সমঝতার বিনিময়ে আমরা যেন এ প্রস্তাব মেনে নিই।
শিপন তালুকদার/এমএএস