জাবিতে ১৫ জুলাইকে ‘কালরাত্রি’ ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার ঘটনায় ১৫ জুলাই রাতকে ‘কালরাত্রি’ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৭ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়।
আরও পড়ুন
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৫ জুলাই রাতকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালরাত’ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান।
ওই হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক ও নারী শিক্ষার্থীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের পাদদেশে জড়ো হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করেন। পরে একটি মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করলে, সেখানে আবারও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে পুনরায় হামলা হয়। হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন, যাদের মধ্যে বহিরাগতরাও ছিলেন। হামলাকারীদের অধিকাংশের মাথায় হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এ ছাড়া পেট্রলবোমা নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। শিক্ষার্থীরা হামলা থেকে বাঁচতে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নিলে, তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
রাত গভীর হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন হল থেকে ২ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী বের হয়ে এলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। তবে ছাত্রলীগ পালালেও এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে এক শিক্ষক, চার সাংবাদিকসহ ছয় শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন।
মেহেরব হোসেন/এএমকে