৩ বছরেও শেষ হয়নি শাবি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার তদন্ত
২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। টানা ৭ দিন প্রায় ১৬৩ ঘন্টা অনশনের পর অধ্যাপক জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।
তবে ঘটনার তিন বছর পার হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার পেছনে কারা দায়ী এবং কার আদেশে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তা অজানাই রয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সেদিন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি তিন বছরেও।
জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রী হল বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্বারা অবরুদ্ধ হন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এরপর অবরুদ্ধ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ উত্তরের ডেপুটি কমিশনার আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশ এবং কুইক রেসপন্স টিমের (কিউআরটি) সদস্যরা। এর একপর্যায়ে পুলিশ ফরিদ উদ্দিনকে বের করে আনতে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ আহত হন অন্তত অর্ধশতাধিক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৬ জানুয়ারি রাতেই জরুরি সিন্ডিকেট সভায় আট সদস্যবিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্যটি নিশ্চিত করেন। ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে সভাপতি ও রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেনকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাসকে কমিটির সদস্য করা হয়।
পুলিশি হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শুরু হয় আন্দোলন। হামলার পরপরই অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তা খোলা রাখতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেগবান হয় আন্দোলন। পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়ার পরও পদত্যাগ না করায় ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন। প্রথমে ১৫ জন ছাত্র ও ৯ জন ছাত্রী এতে অংশ নেন। পরবর্তীতে সে সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়ায়।
একদিকে অনশন ও আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস। অন্যদিকে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ঘটনায় দুই থেকে ৩০০ অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে লেখা হয়- আন্দোলনরত ২০০-৩০০ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অথচ সেখানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে সেখানে এর কিছুই ঘটেনি। তাদের ভাষ্যমতে, পুলিশই প্রথম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। পুলিশের সে মামলা দুই বছরেরও অধিক সময় চালু রাখে প্রশাসন।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অর্থ সহযোগিতা করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আন্দোলনে অনুদান ব্যবহার করা একাধিক অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগের হামলাসহ চারপাশ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার পথ বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক শাস্তির মধ্যে রাখে তৎকালীন প্রশাসন। তবুও থেমে থাকেনি আন্দোলন।
অপরদিকে উপাচার্যের পক্ষে মাঠে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের নিয়ে ‘অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও কটূক্তি’র অভিযোগ এনে সমাবেশ করেন তারা। শুরুতে ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষক থাকলেও পরে আরও অন্তত ৪০ জন শিক্ষক সেখানে যোগ দেন। তারা সবাই এর আগে উপাচার্যের বাসভবনে ছিলেন। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই উপাচার্যপন্থি হিসেবে পরিচিত বলে জানা যায়। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে কেন নিশ্চুপ ছিলেন, সে প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষকেরা তখন বলেছেন, ওই রাতে কী ঘটেছিল, তা তারা জানেন না।
শিক্ষকদের বড় অংশের সমর্থন ছাড়াই আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। টানা অনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভার্তি হন তারা। তবে অসুস্থ হলেও অনশন ভাঙতে নারাজ ছিলেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দে যেন উন্মুখ থাকতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা। পরবর্তীতে আন্দোলনের ১৩তম দিন দিবাগত রাত ৪টার দিকে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনশনস্থলে যান। সেখানে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তার স্ত্রী ইয়াসমিন হকও সঙ্গে ছিলেন। এরপর তার আশ্বাসে ৭ দিন পর অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।
বলা হয়ে থাকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে জাফর ইকবালকে ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে সরকার। অন্যদিকে সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগও কমিয়ে আনেন জাফর ইকবাল। আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙালেও সে আশ্বাস সহসাই পূরণ করেনি সরকার। বরং বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর করা মামলা না তুলে সে মামলায় ভয় দেখিয়ে হেনস্তা করতো প্রশাসন। আন্দোলনকারীদের বাড়ি বাড়িও হুমকি দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে ক্লাসেও আন্দোলন কেন্দ্রিক হেনস্তার ঘটনাও ঘটিয়েছেন শিক্ষকরা।
তবে এতকিছুর পরও সেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিল দ্রুত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ। তবে বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারেনি সেই তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি সংঘর্ষের ঘটনার তথ্য ও ভিডিও চেয়ে সে বছর ২৬ জানুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে যেকোন তথ্য ডিন, ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের অফিস কক্ষের সামনে রক্ষিত বক্সে জমা দেওয়ার অনুরোধ জানায় তদন্ত কমিটি। সে অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য জমা পড়লেও সে বিষয়ে পরবর্তীতে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তবে এতদিন পার হয়ে যাওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার কেন নিশ্চিত করা যায়নি সে নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মনেও। এখনো সে আন্দোলনের স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী। শারীরিক ও মানসিক জটিলতায়ও ভুগছেন অনেকেই। ন্যায়বিচার পেতে তারা নতুন করে এ হামলার তদন্ত দাবি করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে পুলিশ ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের পেটানোর যে নজিরবিহীন ঘটনা তৎকালীন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন ঘটিয়েছিলেন তার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই সময়ে গঠন করা লোক দেখানো তদন্ত কমিটির কোনো তৎপরতাই ক্যাম্পাসের কারও চোখে পড়েনি। ওই দিনের হামলায় আহত সজল কুন্ডুর চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণসহ সরকারের পক্ষ থেকে যেসব আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল তার একটিও পূরণ হয়নি। অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করবে এমন আশাও অবশ্য আমাদের ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে নতুন যারা দায়িত্ব নিয়েছেন তাদেরও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে প্রশাসন যদি সত্যিই শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে আন্তরিক হয়ে থাকে তবে তাদের উচিত দ্রুত ১৬ জানুয়ারির হামলার নির্দেশদাতা ও জড়িতদের বিচারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী মেহরাব সাদাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর বোমা আর গুলি বর্ষণের ঘটনা মানেই আমাদের মাথায় জ্বলজ্বল করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাম্প্রতিক ঘটনা। তবে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা এর পাশাপাশি বাইশের ১৬ জানুয়ারি কে কখনোই ভুলবে না। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে তৎকালীন ভিসি এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা সাজোয়া যানসহ পেটোয়া বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার চালায়। সজল কুন্ডু ভাই এখনো গায়ে স্প্লিন্টার নিয়ে ঘুরছেন। অথচ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাতে প্রহসনমূলক এক তদন্ত কমিটি বানানো হলেও কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। শিক্ষার্থীদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েও উপাচার্য ফরিদ বহাল তবিয়তেই স্বপদে বহাল থাকে। উল্টো আহতদের ক্ষতিপূরণের বদলে সজল কুন্ডু ভাই এর রুটি রুজি কেড়ে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। স্বৈরাচার পতনের পর এই নতুন বাংলাদেশে ১৬ জানুয়ারির সকল কুশীলবদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, সে সময় যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, দৃশ্যত সেটি ব্যর্থ। তাই সেটি পুনর্বিবেচনা করে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এই প্রশাসনের কাছে আরও চাওয়া, পুলিশি হামলায় গুরুতর আহত হওয়া সজলের চিকিৎসা ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং হামলায় আহত অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং অনশনকারীদের খোঁজ নিয়ে কারো যদি শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সাহায্য করবে। সেসময় এক নারী শিক্ষার্থীর সাথে হওয়া যৌন নিপীড়নের হোতাকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনবে। এটা স্পষ্ট যে পতিত স্বৈরাচার সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, গোয়েন্দা সংস্থার কিছু লোক এবং শাবি প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের ভিসি ফরিদের এক ধরনের মিথোজীবী সম্পর্ক ছিল। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই ধরনের ব্যক্তি/গোষ্ঠীগুলোকে চিহ্নিত করে সমূলে উৎপাটন করতে হবে এবং পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই সিন্ডিকেটগুলো নতুন মোড়কে গজাতে না পারে। আশা করব ২০২২ এর ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর করা বর্বরোচিত পুলিশি হামলার জন্য দায়ী তৎকালীন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনসহ জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হবে বর্তমান প্রশাসন।
তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস বলেন, আমাকে ওই সময়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে সেই কমিটিতে রাখা হয়। আমার যতদূর মনে পড়ে আমি থাকাকালীন মাত্র একবার একটি মিটিং হয়েছিল, তাও অনলাইনে। এরপর তদন্ত কমিটির আর কোনো মিটিং হয়েছিল বলে আমার মনে পড়ে না এবং আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি না থাকাকালীন সময়েও আমাকে আর কেউ এ ব্যাপারে কিছু জানাননি। আমি তৎকালীন সময়ে উপাচার্যকে বলেছিলাম সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকে যেন তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়। কিন্তু তিনি শোনেননি। কিন্তু কী কারণে আর সে তদন্ত আগায়নি সেটা আমার জানা নেই।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার বলেন, আমরা যখন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছিলাম, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেভাবে সাড়া পাইনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পর তারা আমাকে জানায় যে এটা নিয়ে আর আগানোর দরকার নেই। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কথা মতো আমরাও এটা নিয়ে আর কথা বলিনি।
আরএআর