বাকৃবি কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পাশে চিরকুট
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল (৪৫) নামে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের এক কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ সোহেলের অফিসের সামনে উপস্থিত হয়ে দরজার লক ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহের পাশে একটি টেবিল ছিল এবং টেবিলের ওপর কাচ লাগানো ছিল। কাচের ওপর একটি কাঠের চেয়ার ছিল। ওই চেয়ারে পায়ের ছাপও দেখা যায়। ওই রুমের একপাশে একটি ভাঙা চেয়ার ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সোহেলের একটি মোবাইল, চিরকুট, মানিব্যাগ (নগদ টাকা, এটিএম কার্ড), জাতীয় পরিচয়পত্র (তার ও তার স্ত্রীর), টেবিলের ওপর থাকা কিছু কাগজপত্র এবং তার পরিহিত জুতা ও মোজা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
তবে তদন্তের স্বার্থে চিরকুটের বিষয়ে কিছু জানানো যাবে না বলে জানিয়েছেন অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান। এ সময় বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হেলাল উদ্দীন, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীমসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মোস্তাইন কবীর সোহেল কখন এসেছেন কেউ দেখেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে তিনি অফিসে আসেন। ওই বিভাগের মৌসুমি শ্রমিক সুমন নামের একজন ঘটনাটি প্রথম দেখেছেন বলে জানা যায়। মোস্তাইন কবীর সোহেল ৫ আগস্টের আগে ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোস্তাইন কবীর সোহেল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগে প্রবেশ করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তারা জানান, তার স্ত্রী এসে বলেছেন যে তিনি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাজার করার জন্য বের হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। দরজা লক ছিল। পরে থানায় জানালে পুলিশ এসে লক খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তারা মরদেহটি মেডিকেলে পাঠায়। তবে কী জন্য আত্মহত্যা করেছেন এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, তিনি (সোহেল) আজকে নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিসে এসেছিলেন, তখন অফিসে কেউ ছিল না। তিনি নিজেই তার কক্ষের তালা খুলে প্রবেশ করেছেন এবং আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে টেবিলের ওপর উঠেছিলেন। টেবিলে ওঠার পায়ের ছাপ আমরা দেখেছি। ঘটনাস্থলে দুইটি নোট পাওয়া গেছে, যেগুলো পুলিশের কাছে আছে।
মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/এমজেইউ