জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্তির দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের (২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতা-কর্মীরা বলেন, ২৪ শের জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন ধারার রাজনীতির সূচনা হয়েছে। সেই সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রদলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই লক্ষ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সমগ্র বাংলাদেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ৩১ দফার প্রচারণা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। ছাত্রদল হবে নতুন বাংলাদেশের ছাত্র প্রতিনিধি।কিন্তু গতকাল (২৪ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পরে সিনিয়র থেকে জুনিয়র পর্যায়ের সব ত্যাগী ও হামলা-মামলার শিকার নেতাকর্মীদের পদবঞ্চিত করে অছাত্র, ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা এবং বিপ্লবোত্তর সময়ে রাজনীতিতে আসা হাইব্রিডদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রেখে যারা জীবন বাজি রেখেছেন তাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। বিশেষ করে ১১তম ব্যাচকে (২০১৫-১৬ সেশন) ইচ্ছাকৃতভাবে পদবঞ্চিত করা হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সব কার্যক্রম, হরতাল-অবরোধ সমাবেশসহ সব প্রোগ্রামের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ১১ তম আবর্তনের, রাজপথের সব আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ১১ ব্যাচ ছিল সম্মুখবাদী।
১১ ব্যাচের নেতারা বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্তৃক তৎকালীন সময়ে ব্যাপক হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তথাপিও ২৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ১৫-১৬ সেশনকে বাদ দিয়ে তারা যে মাইনাসের রাজনীতি কায়েম করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে তা অত্যন্ত ঘৃণিত কর্মকাণ্ড ও ন্যক্কারজনক।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১৫-১৬ সেশনের অনেক শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সোনালি সময় বন্ধু-বান্ধব শিক্ষার্থী সহপাঠীদের সঙ্গে উপভোগ করে কাটাতে পারেনি। অধিকাংশই লুকিয়ে ক্লাস করেছেন। ২৮ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ১৫-১৬ সেশন সামনের সারিতে থেকে লড়াই সংগ্রাম চালিয়েছে।
অনতিবিলম্বে সদ্য ঘোষিত অনিয়মের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে অংশগ্রহণ মূলক, বুদ্ধিভিত্তিক, মেধা ও পরিশ্রমের মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ২০১৬ সাল থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সব মিথ্যা মামলার হাজিরা, এমনকি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১১তম আবর্তনের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে যে পরিচিত মুখগুলো রাজপথে ছিল তাদেরকে আজ যেভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে তা সত্যি দুঃখজনক, যা তরুণ প্রজন্মকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পতাকাতলে আসতে নিরুৎসাহিত করবে বলে আমরা মনে করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস শুকুর আইমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক মো. রায়হান হোসেন অপু , যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক সাইফ শাহিন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদ চৌধুরি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সোলাইমান খান সাগর, ছাত্রনেতা ইমরান হোসাইন, বাবলী আক্তার সাথী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএল/এআইএস