৫ আগস্টের পর আমরা বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি : আকবর হোসেন
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যখন সরকার হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন মেয়েরা। বিগত সময়ে বাংলাদেশের একাধিক টিভি স্টেশনে ভারতীয় সংস্থার লিখিত স্ক্রিপ্টের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আমরা আমাদের বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি। আমাদের বর্তমান স্বাধীনতাকেই রূপক অর্থে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে রাবি প্রেসক্লাবের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর গণমাধ্যমের সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় আকবর হোসেন আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবোত্তর গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্য আগে সাংবাদিকদের মানসিকতার সংস্কার বেশি প্রয়োজন। এ বিপ্লবই বলে আমাদের তরুণদের যে আকাঙ্ক্ষা থাকে সেটা হচ্ছে স্বাধীনতা। সাংবাদিকদের কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা দরকার। এ সরকার পতনে পর সাংবাদিকরা কেন পালাবে? তারা কতটা খারাপ আমাদের থেকে তারা নিজেরাই ভালো জানে।
ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে অনেক ইয়াংরা সাংবাদিকতায় আসতে চায় কিন্তু পরে থাকতে চায় না। কারণ তাদের সামান্য বেতনও দেওয়া হয় না। এ ছাড়া আমি অনেক ভালো সাংবাদিককে দেখেছি শুধু কম বেতনের কারণে তারা ২-৩ বছর পর সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন যে গণমাধ্যম বেতন দিতে পারবে না তারা টিকে আছে কীভাবে? যদি ১০ জনকে নিয়োগ দেন তাহলে ১০ জনকেই পেইড করতে হবে। আর সাংবাদিকতায় কেউ রাস্তা করে দেয় না, এটা নিজেকে করে নিতে হয়। চাপ আসবে এটা মোকাবিলা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব। রাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি জুবায়ের জামিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন এবং রাবি প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, সাংবাদিকদের সমাজের মুখপাত্র ধরা হয়। জুলাই বিপ্লবে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছে। অনেকে আহত-নিহত হয়েছেন। যারা ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা করে তাদেরকে আমরা স্টুডেন্ট জার্নালিস্ট বললে ভালো হয়।
সভাপতির বক্তব্য জুবায়ের জামিল বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর গণমাধ্যমের সংস্কার’ শীর্ষক আমরা এক আলোচনা সভার আয়োজন করছি। পাশাপাশি আমরা প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্যের স্মৃতিচারণ এবং এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।
এ সময় জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার, শেরে-বাংলা ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলামসহ রাবি প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় প্রেসক্লাবের সামনে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে ও কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। পরে র্যালি বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে সংগঠনটির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
জুবায়ের জিসান/এমজেইউ