শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ন্যূনতম ৫ শতাংশ বরাদ্দ করতে হবে
দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে শিক্ষাখাতে বাজেটের বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে এবং ন্যূনতম মোট বাজেটের ৫ শতাংশ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষায় ফান্ডিং না বাড়াতে পারলে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে আমরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়বো বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়ামের (আইআরডিসি) আয়োজনে ‘বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন : প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সুগম করা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মির্জা গালিব তরুণ গবেষকদের উদ্ভাবনী চেতনা বিকাশে এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “বর্তমান বিশ্বে সবকিছুই অনেক চ্যালেঞ্জিং, টেকনোলজি দ্রুত পরিবর্তনশীল, গ্লোবালি প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। যেসব দেশ সায়েন্স ও টেকনোলজিতে এগিয়ে তারাই অর্থনৈতিকভাবে ততো প্রসারিত। আমাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গবেষক তৈরি করতে হবে সঙ্গে সঙ্গে টেকনোলজিও উন্নত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে যে শিক্ষা কারিকুলাম রয়েছে তার ব্যাপক পরিবর্তন করা প্রয়োজন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামেরও উন্নতি প্রয়োজন সেটাতেও সন্দেহ নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার ছাত্র শিক্ষকের যে বন্ডিং, শিক্ষকদের যোগ্যতা ও শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া যেন দুর্নীতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। আমাদের মনে রাখতে হবে একজন ভালো ছাত্রকে ভালো শিক্ষকের সঙ্গে যদি বটতলায়ও বসিয়ে দেন সেখানেও শিক্ষা হবে। আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের যে প্রক্রিয়া তা অনেক সময় ভালো শিক্ষক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। এক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এলেই শিক্ষার ক্ষেত্রে বিপ্লব করা সম্ভব।
প্যানেল আলোচনায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দল-মতের ঊর্ধ্বে মেধাবীদের মূল্যায়ন করতে হবে। এতো বছর বিজ্ঞান প্রযুক্তি উদ্ভাবনের আড়ালে লুটপাট হয়েছে একারণে আমাদের নৈতিক মানদণ্ডে বলীয়ান হতে হবে, এর শিক্ষা ইসলাম আমাদের দিয়েছে।”
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে সালেহ আহমেদ বলেন, “এতো বছর কত টেকনোলজি উদ্ভাবন হলো কিন্তু এতে আমাদের কোনো অবদান নাই। শুধু উন্নয়নের জোয়ারে ভাসলে হবে না, এসব উন্নয়ন আমাদের নিজস্ব টেকনোলজি দ্বারা তৈরি হলে আমরা আরও উৎফুল্ল হতে পারতাম।”
সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু লায়েক বলেন, “জনসংখ্যাকে মানব সম্পদে রূপান্তর করার মূল উপায় হচ্ছে শিক্ষা। আমাদের অ্যাকাডেমিক ইন্ডাস্ট্রি কোলাবোরেশনের গুরুত্ব দিতে হবে, এর মাধ্যমে আমরা গবেষণালব্ধ ফলাফলকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবো।”
অনুষ্ঠানটির শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইআরডিসির প্রেসিডেন্ট ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এবং সঞ্চালনা করেন আইআরডিসি এর জেনারেল সেক্রেটারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। এ সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
এমএল/এসএম