হাসনাত-সারজিসকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ-ছাত্র জনতা। পরে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি রোকেয়া হল-স্মৃতি চিরন্তন-গুরুদুয়ারা হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় নেতৃবৃন্দ ৪ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-
১. বাংলাদেশের হিন্দুদের ওই হিন্দুত্ববাদী প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।
২. দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পেছনে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩. গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৪. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন
সমাবেশে নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যে দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা আজানের সময় পূজার ঘণ্টা বন্ধ রাখে, পূজার সময় যেন হামলা না হয় মুসলমান ভাইয়েরা পূজার সময় পাহারা বসায়। এই বাংলাদেশে কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্যে ধাবিত করা যাবে না। সাইফুল ভাইকে (অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ) হত্যা ও হাসনাত-সারজিসের ওপর হামলা চালিয়ে বাংলাদেশের মুসলমানদের কোনোভাবেই উসকানো সম্ভব না। বাংলাদেশ কোনো সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না।
চার দফা দাবি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আমাদের অসংখ্য মানুষ আহত-নিহত হয়েছে, অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। যে বিজয় আমরা অর্জন করেছি, বাংলাদেশ যতদিন আছে কেয়ামত পর্যন্ত সেই বিজয়কে ধরে রাখতে হবে। সেই ধরে রাখার জায়গা থেকে চার দফা দাবিতে বাংলাদেশের সকল মানুষকে জেগে ওঠার আহ্বান জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্বের পাহারাদার যারা তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন করার পরিকল্পনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, এই বাংলার মাটিতে দিল্লির ক্রীতদাস হাসিনাকে ভারত টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এ দেশের কেউই আর দিল্লির দালালি করবে না। ভারতের শেষ ভরসা ছিল চিন্ময় কৃষ্ণ। এখন তারা একে একে টার্গেট করছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের। আমরা যেকোনো সময় আমাদের জীবন দেশের স্বার্থে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত আছি। আমাদের মেরে ফেললে দেশের সার্বভৌমত্ব থেমে যাবে না।
প্রসঙ্গত, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেএইচ/এমজেইউ