সোমবারকে ‘মেগা মানডে’ ঘোষণা সোহরাওয়ার্দী-নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীদের
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবারকে ‘মেগা মানডে’ ঘোষণা করেছেন এ দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। রোববারের ঘটনার জবাব দিতে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সকল শিক্ষার্থীকে জড়ো হওয়ার জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ব্যক্তির দোষের দায়ভার পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়তে পারে না। দেশের অন্যতম পুরোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এরকম হামলার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সেজন্য এর প্রতিবাদে সোমবার শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কলেজে অবস্থান নেবেন। একইসঙ্গে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, রোববার কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছিলেন না। কেন্দ্রীয় পরীক্ষার কারণে সব ক্লাস বন্ধ ছিল। এরকম হামলার ঘটনা নজিরবিহীন। সেজন্য, সোমবার সকাল ১০টায় সব শিক্ষার্থীরা কলেজে উপস্থিত হবে। আমাদের কলেজে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৫কোটি টাকা। এই ক্ষয়ক্ষতির সমস্ত দায় ডিএমআরসি কর্তৃপক্ষের।
রবিউল ইসলাম নামের কবি নজরুল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, যারা কলেজে হামলা চালিয়েছে ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে আইনের মুখোমুখি করতে হবে। দ্রুত সোহরাওয়ার্দী কলেজকে নতুনভাবে সংস্কার করতে হবে।
অবশ্য এরই মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ড. মাহাবুবুর মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি) এবং অন্যান্য কলেজের ছাত্ররা হামলা চালিয়েছে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে অধ্যক্ষ পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়েও সন্তোষজনক কোনো সাড়া পাননি। হামলাকারীরা কলেজ ভাঙচুর করে এবং কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদেরকে আহত করেছে। তারা কলেজের ১৭টি বিভাগের প্রতিটিতে হামলা চালায় এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সনদ ও বিভাগীয় সকল গুরুত্বপূর্ণ কাগজ আগুনে পুড়িয়ে দেয়। একই সময়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজেও বর্বরোচিত হামলা চালায়।
আরও পড়ুন
এতে আরও বলা হয়েছে, আজকের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রধান ফটকে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ মিছিল করা হবে।
অপরদিকে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দুটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরা।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। তারা পাল্টা আক্রমণে যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, কেউ কোনো গ্রুপে উসকানিমূলক কিছু লিখবে না এবং শান্ত থাকবে।
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজের শান্তিপ্রিয় শিক্ষার্থীরা অঙ্গীকারবদ্ধ যে, তারা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালাবে না। যদি কোনো সন্ত্রাসী এই সুযোগের অপব্যবহার করে তবে এর জন্য সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন, শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ এবং ছাত্র-ছাত্রীরা দায়ী থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরএইচটি/এমজেইউ