‘এই আন্দোলন আমাদের বাঁচা-মরার লড়াই’
সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির এই আন্দোলন নিজেদের বাঁচা-মরার লড়াই বলে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নেতারা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ঢাবির কলা ভবনের সম্মুখ গেটে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে তারা এই দাবি করেন। এদিন সকাল থেকেই সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরতি নেন ঢাবি শিক্ষকরা।
এর আগে সোমবার (১ জুলাই) থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন ঢাবি শিক্ষকরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা।
আরও পড়ুন
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, এই আন্দোলন শুধু আমাদের আন্দোলন না, এই আন্দোলন নতুন প্রজন্মের জন্য, আগামী দিনের শিক্ষার্থীদের জন্য। এই আন্দোলন আমাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। এই লড়াইয়ে আমরা বিজয়ী হয়েই ক্লাসে ফিরব।
তিনি বলেন, অনেকে বলছে আমরা নাকি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন করছি। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে আন্দোলন করছি না। বরং আজকে আমাদেরই জিম্মি করে রাখা হয়েছে। আমাদের ওপর অন্যায় দাবি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই আন্দোলন অত্যন্ত পরিষ্কার ও ন্যায্য। এই স্কিমটি শিক্ষকদের জন্য লজ্জাজনক। তাই আমরা আমাদের দাবি আদায়ের জন্য সব দল মত নির্বিশেষে একত্রিত হয়েছি। এই আন্দোলন আমাদের বাঁচা-মরার লড়াই।
তিনি বলেন, আজকের এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদেরও আন্দোলন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শৃঙ্খলে রাখার আন্দোলন। আমরা করোনার ক্ষতি পুষিয়ে দিয়ে এবং অন্যান্য সেশনজট নিরসনে পদক্ষেপ নিয়েছি। ১২ মাসের একাডেমিক বছরের জায়গায় ৮ মাসের বছর করেছি। এক বছরে ৩টি সেমিস্টার রেখেছি। এভাবে আমরা শিক্ষার্থীদের সব সেশনজট দূর করেছি। তাই এটা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো আন্দোলন নয়।
প্রসঙ্গত, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিনদিন সারাদেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরে গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয় এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়।
কেএইচ/জেডএস