সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে চবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, ভোগান্তি
প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারে দাবিতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মতো অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চবি শিক্ষক সমিতি। ফলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস এবং অন্যান্য ৭টি বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
১ম বর্ষের ক্লাস ৩০ জুন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ক্লাস করার স্বাদ পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
হতাশা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস করবো, নতুন শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় হবে, কিন্তু শিক্ষকদের একটি আন্দোলনের কারণে সব ভেস্তে গেল।
এদিকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিভাগগুলো হলো- জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, আরবি বিভাগ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ এবং পালি বিভাগ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে এর আগেও কয়েক দফায় অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে চবি শিক্ষক সমিতি। তবে সে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান ছিল। সর্বশেষ সোমবার (১ জুলাই) কেন্দ্র ঘোষিত চবি শিক্ষক সমিতির সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনকে ভিন্ন চোখে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাজিদুর রহমান মারুফ বলেন, সর্বজনীন পেনশন নিয়ে সম্মানিত শিক্ষকরা সোচ্চার, কিন্তু কোটার মত জাতীয় বিষয়ে সম্মানিত শিক্ষকরা চুপ। স্বার্থ বড়ই অদ্ভুত জিনিস!
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুর রহিব রবিন বলেন, শিক্ষকদের পেনশনের টাকার জন্য শিক্ষার্থীরা কেন ভুক্তভুগি হবে? এতদিন হাফ-ডে কর্মবিরতি পালন করলেও জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষকরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছেন। এতে করে শিক্ষকদের দাবি আদায় হবে ঠিকই; কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলির পাঁঠা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এই নিয়মে আমাদের বর্তমান শিক্ষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না; বরং জুলাই ১ তারিখের পর যারা শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গবেষণা। সুতরাং এটা ব্যহত হলে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব দাবি-দাওয়া আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করলে ভালো হয়। এতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী দুই পক্ষই উপকৃত হবে।
আতিকুর রহমান/এসএম